খবর অনলাইনডেস্ক: অনশনরত অবস্থায় একের পর এক চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তবুও কোনো হেলদোল নেই প্রশাসনের। এবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন ডা. অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয় ডা. অনুষ্টুপকে। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই পেটে যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। তারপরই অনুষ্টুপের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। দেওয়া হয় ওযুধও। কিন্তু তাতে কমেনি তাঁর পেটে যন্ত্রণা। তখনই তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাত ১১টা নাগাদ গ্রিন করিডোর করে অনুষ্টুপকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা অনুষ্টুপের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার পর তাঁকে সিসিইউতে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন।
চিকিৎসক ডা. অনির্বাণ সিনহা খবর অনলাইনকে জানিয়েছেন, “পেটের আলসার থেকে রক্ত বেরোচ্ছে অনুষ্টুপের। না খাওয়ার জন্যই এটা হয়েছে।”
অনুষ্টুপের চিকিৎসার জন্য ৮ জন চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। সেই দলে থাকা চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ জানান, অনুষ্টুপের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও এখনও সঙ্কটমুক্ত নয়। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। শনিবার রাত পর্যন্ত হাসপাতালে রয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার অঞ্জন অধিকারী। তিনিও অনুষ্টুপের স্বাস্থ্যের খবরাখবর রাখছেন।
গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া অনুষ্টুপ। টানা সাত দিন সেখানেই অন্যদের সঙ্গে অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় পেটে যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের জানান, তাঁর মূত্রের সঙ্গে রক্ত বার হচ্ছে। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর প্রতিনিধিরা তাঁকে পরীক্ষা করেন। প্রয়োজনীয় ওষুধও দেন। কিন্তু তারপরেও কমেনি পেটে ব্যথা। তখনই আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা সিদ্ধান্ত নেন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
এদিকে, শনিবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার অলোক বর্মাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে। তার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মতলার অনশনমঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। আরজি করেই এখনও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। ফলে এখনও পর্যন্ত তিনজন চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তবুও প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই।