Home খবর রাজ্য অভিষেকের জয়ে শুভেন্দুর ‘বিপর্যয়’! তৃণমূলের কোন অস্ত্রে বাংলায় ঘায়েল বিজেপি?

অভিষেকের জয়ে শুভেন্দুর ‘বিপর্যয়’! তৃণমূলের কোন অস্ত্রে বাংলায় ঘায়েল বিজেপি?

কলকাতা: ২০২১-এর পর আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা বাংলার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারী লড়াইয়ে জয়ী তৃণমূল সেনাপতি। বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফলকে ধুলোয় মিশিয়ে দিল ফের মমতা-ম্যাজিক। এমন কী অস্ত্রে বাংলায় বিজেপিকে ঘায়েল করল তৃণমূল?

ভোট মিটতেই বুথফেরত সমীক্ষাকে সামনে রেখে চুলচেরা বিশ্লেষণে নেমেছিল সংবাদ মাধ্যম। কেই-ই বাংলার ৪২ আসনে বিজেপির থেকে এগিয়ে রাখেনি তৃণমূলকে। আজ ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিনে বাংলায় বিজেপি বা আরও স্পষ্ট করে বললে শুভেন্দু অধিকারীর এই বিপর্যয়ের কারণ খোঁজার কাজ চলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের একটা বড় অংশের মতে, এ রাজ্যে বিজেপিকে ঘায়েল করতে আলাদা করে কোনো অস্ত্র ব্যবহার করতে হয়নি তৃণমূলকে। কারণ, তারা নিজেদের অস্ত্রেই নিজেরা কুপোকাত হয়েছে। তৃণমূলের তরফে ভোটের আগে যে কয়েকটি ইস্যুতে বেশি করে জোর দেওয়া হয়েছিল, সেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল একশো দিনের কাজ-সহ কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা, রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার, শুধুমাত্র সরকারে বসার লক্ষ্যে ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসা একটা সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত, ইত্যাদি।

একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল-বিজেপি বাগ্‌যুদ্ধ দেখে এসেছে বঙ্গবাসী। দু’তরফ থেকেই উঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্য-পরিসংখ্যান। এক দিকে যখন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে তৃণমূলের নয়ছয় করার বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন শুভেন্দু-সুকান্ত-দিলীপরা, অন্য দিকে রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে টাকা আটকে রাখা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা-অভিষেকরা। দিনের শেষে, বাংলার মানুষ বুঝেছেন, টাকা আটকে রাখার পিছনে যাই কারণ থাকুক না কেন, আসলে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলা।

২০২১-এর বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বাংলায় ‘অতিসক্রিয়’ হয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জেলে যেতে হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকদের, তিহাড়ে ঠাঁই হয়েছে বীরভূমের অসংবাদিত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। দুর্নীতি যে হয়েছে, তা কিছুটা প্রমাণিত হয়েছে আদালতে। কিন্তু বিজেপি নেতারা যখন প্রকাশ্যে বলছেন, ‘এর পর একে ঢোকাব, ওকে ঢোকাব’, তখন মনে হতেই পারে তাঁদের কথাতেই চলছে এইসব কেন্দ্রীয় এজেন্সি। বুথ স্তরে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোয় মনোযোগ না দিয়ে এ ধরনের চমকদার কৌশলই সম্ভবত ব্যুমেরাং হয়েছে বিজেপির।

দেখা যাচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রচারে উঠে আসা এই বিষয়গুলিকে লঘু করে দেখেননি ভোটাররা। ইডি-সিবিআই-আয়কর-আদালত দিয়ে তৃণমূল সরকারকে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন খোদ মমতা। কাজে যে লেগেছে, সেটা এখনও পর্যন্ত ফলাফলের যা প্রবণতা তাতেই স্পষ্ট।

গত বার (২০১৯) যেখানে ২২ আসনেই থেমে যেতে হয়েছিল তৃণমূলকে, সেখানে এ বার ৩০ ছুঁয়ে ফেলার প্রায় নিশ্চিত সম্ভাবনায় কাজ করেছে এরকমই সব ফ্যাক্টর। আর মমতার লক্ষ্মী ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, দুয়ারে সরকার তো আছেই!

আরও পড়ুন: বাংলায় ফের মমতা-ম্যাজিক, আরও শক্তি বাড়াল তৃণমূল

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version