‘যাঁরা চাকরি ফিরে পেয়েছেন, তাঁরা নিশ্চিন্তে স্কুলে ফিরে যান’, এমন বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর কলেজ মাঠের প্রশাসনিক সভা থেকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আন্দোলন নয়, কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে ক্লাস করাই এখন বেশি জরুরি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “গরমে বসে থাকবেন না। বেতনের চিন্তা করবেন না। সরকার বেতন দেবে, যারা আপনাদের উস্কানি দিচ্ছে, তারা কিছু দেবে না।”
প্রয়োজনে আবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথাও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “আপনাদের চাকরি গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। আমরা রিভিউ পিটিশন করেছিলাম। গ্রুপ সি-ডি নিয়েও দরকার হলে ফের রিভিউ করব। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন। যারা চাকরি ফিরিয়েছে, তাদের ওপর আস্থা রাখুন— যারা চাকরি কেড়ে নিয়েছে, তাদের নয়।”
এই ইস্যুতেই বিরোধীদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী। নাম না করে বিজেপিকে বিঁধে বললেন, “বাংলায় কিছু লোক বসে আছে, চাকরি খাওয়ার জন্য। জনগণের কোনও কাজ করে না, শুধু কোর্টে গিয়ে পিআইএল করে। চাকরি আমরা দিচ্ছি আর ওরা চাকরি খাচ্ছে! এর দায় কোর্টের নয়।”
এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পূর্ণভাবে আন্দোলনকারীদের পাশে রয়েছেন। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, আমরা রিভিউ করছি।” যদিও আন্দোলনরত চাকরিহারারা যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় এসএসসি ভবনের সামনে সোমবার সন্ধ্যা থেকে অবস্থানে অনড়। যদিও কমিশন একটি বিবৃতি দিলেও, তাতে তালিকা প্রকাশ নিয়ে কিছু উল্লেখ ছিল না।
অন্যদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন ‘জুটা’ আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সরকার যোগ্য-অযোগ্য গুলিয়ে দিতে চাইছে, এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। অবিলম্বে তালিকা প্রকাশ করা উচিত।”
এদিকে এসএসসি ভবনে সোমবার থেকে আটকে রয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান-সহ আধিকারিকেরা। সোমবার রাতে আন্দোলনকারীদের একাংশ ভবনের ভিতরে খাবার পাঠাতে দেননি। পরে অবশ্য পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হয় এবং খাবার প্রবেশ করতে দেয় আন্দোলনকারীরা।
বিধাননগর পুলিশের ডিসি অনীশ সরকার জানান, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে আপত্তি নেই, তবে পুলিশকে কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া চলবে না।