শিল্পে নতুন অধ্যায়ের সূচনা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে শিলান্যাস হল জিন্দল গোষ্ঠীর ১৬ হাজার কোটি টাকার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের। একই সঙ্গে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হল ২০০০ একরের বিশাল শিল্পপার্কের।
শিলান্যাসের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন বাংলার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জেএসডব্লিউ এনার্জির কর্ণধার সজ্জন জিন্দল। তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি গড়ে উঠবে ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নিয়ে, যা থেকে রাজ্যের ২৩টি জেলা উপকৃত হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, “এই প্রকল্প বাংলার একটি ল্যান্ডমার্ক প্রকল্প। পূর্ব ভারতে এমন পরিবেশবান্ধব তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র আগে কখনও হয়নি। উৎপাদিত বিদ্যুৎ রাজ্য সরকার কিনবে—এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।”
জিন্দল বলেন, “লাখো নেতার মধ্যে এমন নেতা একজনই মেলে। শালবনির মানুষদের কর্মসংস্থানের দায়িত্ব আমাদের। এখানে কোনও দূষণ হবে না, আমরা নিশ্চিত করব।”
শালবনির এই জমিই একসময় ইস্পাত প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল বাম আমলে। তবে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর মাওবাদী হামলার জেরে সেই প্রকল্প থমকে যায়। সেই জমিতেই এবার নতুন করে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে শিল্প সম্ভাবনা।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “জিন্দল গোষ্ঠীর এই উদ্যোগে শালবনির পরিবেশ বদলে গিয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে এখানকার উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো হবে।”
স্থানীয়রা এই প্রকল্প ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। বহু বছর আগে জমি দিয়েছিলেন শিল্পের আশায়, অবশেষে তাদের অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও ঘোষণা করেন, “শালবনির পাশাপাশি বক্রেশ্বর-দুর্গাপুর ও সাঁওতালডিতে মোট চারটি নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। রাজ্যে ছয়টি ইকনমিক করিডর তৈরি হচ্ছে এবং পুরুলিয়ায় বিনিয়োগ করতে আসছে পাঁচটি বৃহৎ শিল্প সংস্থা।”
রাজ্যের তরফে স্কিল ট্রেনিং সেন্টার তৈরির ঘোষণাও করা হয়েছে, যাতে স্থানীয়রা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেয়ে এই শিল্পপ্রকল্পে যুক্ত হতে পারেন।