কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ৭৪৮টি ওষুধের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিমার উপর জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিপন্ন হতে পারে। সাধারণ মানুষের উপর বাড়তি চাপ আসবে। ক্যানসারের মতো মারণ রোগের ওষুধের দাম বৃদ্ধি মেনে নেওয়া যায় না।”
বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ৪ ও ৫ এপ্রিল বিকেল ৪টে থেকে ৫টা পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের তরফে বিক্ষোভ সভা ও মিছিল করা হবে। সাধারণ মানুষকেও নিজেদের মতো করে প্রতিবাদে শামিল হতে আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ
মঙ্গলবার থেকে দেশজুড়ে ৭৪৮টি প্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (NPPA)। কোলেস্টেরল, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ থেকে শুরু করে জ্বরের ওষুধ প্যারাসিটামল পর্যন্ত বর্ধিত মূল্যের তালিকায় রয়েছে। ওষুধের এমআরপির উপরে ১.৭৪ শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মানুষের উপর বাড়তি চাপ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ক্যানসারের মতো রোগের ওষুধের দাম কেউ বাড়ায়! যাঁদের প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষমতা নেই, তাঁদের জন্য এই মূল্যবৃদ্ধি বড় আঘাত।” তিনি আরও বলেন, “কোনও ওষুধের দাম ৩১.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে তো কোনও ওষুধের দাম ১১৫.৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।”
গরিব মানুষের বিপদ
মমতার অভিযোগ, সাধারণ গরিব মানুষের চিকিৎসার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কোন শ্রেণির মানুষের কথা ভেবে এই মূল্যবৃদ্ধি? বিত্তবানদের সুবিধার জন্যই কি এই সিদ্ধান্ত?”
তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, আগামী শুক্র ও শনিবার রাজ্যের প্রতিটি জেলায় পথে নামবে তৃণমূল। তিনি জানান, “স্বাস্থ্যই সম্পদ। এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।”
নবান্ন থেকে সরাসরি বার্তা
মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, কেন্দ্র যদি ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে, তবে এই প্রতিবাদ আরও জোরদার হবে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল এই লড়াই চালিয়ে যাবে।