Home খবর রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান চলছে, নবান্নর আলোচনার ডাকে চারদফা শর্ত জুনিয়র ডাক্তারদের

স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান চলছে, নবান্নর আলোচনার ডাকে চারদফা শর্ত জুনিয়র ডাক্তারদের

0
সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য বলছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: রাজীব বসু।

কলকাতা: রাজ্য সরকার এবং আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে দফায় দফায় ইমেল চালাচালি হয়েছে। সরকার জুনিয়র ডাক্তারদের ১২-১৫ জন প্রতিনিধির সঙ্গে ‘নবান্ন’য় আলোচনা করতে চান। কিন্তু আন্দোলনরত ডাক্তাররা চান মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠক। এবং সেই বৈঠকে তাঁদের ৩০ জন প্রতিনিধি থাকবেন। জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনে ‘রাজনীতির খেলা’ দেখছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

মঙ্গলবার দুপুরে সল্ট লেকের করুণাময়ী থেকে শুরু হয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল গিয়ে পৌঁছেছিল স্বাস্থ্য ভবনের সামনে। তারপর শুরু হয় অবস্থান। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার রাত, ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল অবস্থানের। বুধবার সন্ধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের ১২-১৫ জনের প্রতিনিধিদলকে ‘নবান্ন’য় আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা। তাঁরা চারদফা শর্ত দেন।

জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় চলছে স্লোগান, গান, ঢাক বাজানো। ছবি: রাজীব বসু।

ওই চারটি শর্ত হল – এক, অন্তত ৩০ জনের প্রতিনিধিদল থাকবে বৈঠকে; দুই, বৈঠকের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে; তিন, আন্দোলনকারীরা যে পাঁচদফা দাবি আগে জানিয়েছিলেন, সেগুলিকে নিয়েই আলোচনা করতে হবে এবং চার, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে উপস্থিত থাকতে হবে। 

স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তাররা রাত সাড়ে নটা নাগাদ এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার ইমেলের জবাব এক ঘণ্টায় দেওয়া হয়েছিল। তাতে বোঝা যায় তাঁদের সদর্থক ইচ্ছা আছে। তাঁরা চান সব মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদের নিয়ে ৩০ জনের একটি দল নিয়ে যেতে। তাঁরা চান, অভিভাবক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে থাকুন। স্বাস্থ্য ভবন বা নবান্ন, যে কোনো জায়গায় বৈঠক হতে পারে, কিন্তু তা মিডিয়ার উপস্থিতিতে করতে হবে।

ধর্নাস্থলে জুনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: রাজীব বসু

আন্দোলনকারী ডাক্তারেরা জানিয়ে দেন, আরজি করের এই নারকীয় ঘটনার উদ্দেশ্য এখনও অজানা। যতক্ষণ না তা জানা যাচ্ছে, অপরাধীদের ধরা না হচ্ছে, ততক্ষণ কর্মবিরতি চলবে। সারারাজ্যে ৯৩ হাজার সরকারি ডাক্তারের মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারের সংখ্যা সাড়ে সাত হাজার। সেই জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে যদি রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, তাহলে বুঝতে হবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চূড়ান্ত বেহাল দশা।

রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী

জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে গিয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বুধবার সন্ধ্যায় ‘নবান্ন’-য় এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার খোলা মনে আলোচনায় বসতে চায়। কোনো শর্তসাপেক্ষে নয়। খোলা মন এবং শর্ত, দুটি একসঙ্গে চলতে পারে না। অর্থাৎ খোলা মন নেই। নির্যাতিতা বিচার পাক — ব্যাপারটি তা নয়। এর পিছনে রাজনীতির খেলা আছে। তাই এতটা সময় লাগছে এত কিছু চিন্তাভাবনা করতে।”

হল খাবারের ব্যবস্থা, এল জল। ছবি: রাজীব বসু।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার ইমেল

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাছে নবান্ন থেকে প্রথম মেলটি পাঠানো হয়। এটি পাঠান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফ থেকে মেলের জবাব আসার প্রত্যাশায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ‘নবান্ন’য় অপেক্ষা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত তিনি ‘নবান্ন’ ছেড়ে বাড়ি চলে যান।

ওই মেলে বলা হয়েছিল, ‘নবান্ন’-য় এসে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা সরকারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। মেলে এ-ও বলে দেওয়া হয়েছিল, আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলে সর্বোচ্চ ১০ জন থাকতে পারবেন। ওই মেল পাওয়ার পর স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানকারী জুনিয়র ডাক্তাররা সাংবাদিক বৈঠক করে ওই ইমেলটিকে ‘অপমানজনক’ বলে অভিহিত করেন। জুনিয়র ডাক্তারদের যুক্তি ছিল, তাঁদের দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ। অথচ বৈঠকের জন্য যে মেলটি পাঠানো হয়েছে, তা এসেছে স্বাস্থ্যসচিবেরই তরফ থেকে। এমনকি, ওই ইমেলে ‘রেসপেক্টেড স্যার’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, এই আন্দোলনে তো শুধু স্যার নন, ম্যাডামরাও রয়েছেন।

আরও পড়ুন

মেডিক্যাল কলেজগুলির বৈঠক পিছিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, পরের সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা        

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version