Home রাজ্য পূর্ব বর্ধমান জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ল বর্ধমান স্টেশনে, মৃত ৩, জখম ২৭

জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ল বর্ধমান স্টেশনে, মৃত ৩, জখম ২৭

0
ছবি 'X' থেকে নেওয়া।

বর্ধমান:­­­ রেলে দুর্ঘটনা, তবে ট্রেনে নয়, স্টেশনে। বর্ধমান রেলস্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে অন্ততপক্ষে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ২৭ জন। দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়ে আরপিএফ, জিআরপি এবং পুলিশধ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করে। দুর্ঘটনার জেরে স্টেশনের ১, ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পূর্ব বর্ধমান জেলার এসপি আমনদীপ জানান, “স্থানীয় পুলিশ ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার খবর পায় সাড়ে ১২টা নাগাদ। সিনিয়র অফিসারেরা দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার পর প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করে আরপিএফ এবং জিআরপি। স্থানীয় পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্স-এর কর্মীরা উদ্ধারকাজে যোগ দেয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩০ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এঁদের মধ্যে ৩ জন মারা যান।”

ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে আহত ব্যক্তিদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে গুরুতর আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অল্প আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই ওই ওভারহেড ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক বলেন, “করোগেটেড মেটাল শিটে তৈরি এই ট্যাঙ্ক। এটা ঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা দরকার। যদি কংক্রিটের তৈরি হত এই ট্যাঙ্ক, তা হলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়ত।”

মৃত ৩ জনকেই শনাক্ত করা গিয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন মহিলা। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার লাক্কুড়ি গ্রামের মফুজা খাতুন (৩৫)। বাকি দু’জন হলেন ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের বাসিন্দা সোনারাম টুডু (১৯) এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার সাহেবগঞ্জের ক্রান্তি কুমার (১৭)। “হতাহতের অধিকাংশই ট্রেনযাত্রী। দুর্ঘটনা ঘটার সময় তাঁরা প্ল্যাটফর্মের শেডের নীচে দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বহু আহত ব্যক্তির আঘাত সামান্যই। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে”, রেলের এক সিনিয়র আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই এ কথা জানিয়েছে।               

প্রত্যক্ষদর্শীরা কী বলেন

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার বেলা বারোটা নাগাদ দুই এবং তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে একটি ওভারহেড জলের ট্যাঙ্ক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সেই সময় দুটি প্ল্যাটফর্মই যাত্রীদের ভিড়ে থিকথিক করছিল। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার যে শেড আছে, তারই উপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ট্যাঙ্কটি। আচমকা ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভেঙে পড়া ট্যাঙ্কের নীচে থেকে তাঁরা আর্তনাদ শুনতে পান। তাতেই বোঝা যাচ্ছিল বেশ কিছু যাত্রী ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছেন। তাঁদের উদ্ধারের জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই ছুটে আসে আরপিএফ এবং জিআরপি। ছুটে আসেন রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও। তৎপর হয় নবান্ন।    

বর্ধমান স্টেশনে আচমকা এ রকম দুর্ঘটনা নতুন নয়। বছরতিনেক ঘটেছিল আর-এক দুর্ঘটনা। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল একটি পুরোনো স্টেশনভবনের বারান্দা। এতে অবশ্য বড়োসড়ো কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। দু’ জন আহত হয়েছিলেন। সেই দুর্ঘটনার পর স্টেশনের সামগ্রিক রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। কিন্তু এ বার জলের ট্যাঙ্ক আচমকা ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রমাণ হল, সেই দুর্ঘটনার পরেও পুরোনো বর্ধমান স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের টনকই নড়েনি।

আরও পড়ুন

নিরাপত্তায় বড়সড় খামতি, লোকসভায় ধোঁয়া-তাণ্ডব! কী ভাবে ভিতরে ঢুকলেন ২ বহিরাগত

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version