আরজি কর মেডিকেল কলেজের ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করল সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। বুধবার সিবিআই-এর সূত্র উদ্ধৃত করে এই তথ্য জানিয়েছে পিটিআই।
সিবিআই-এর আইনি পরামর্শ অনুযায়ী, এই মামলাটি “বিরলতমের মধ্যে বিরল” (rarest of rare) বলে বিবেচিত হতে পারে এবং তাই মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্য। যে কারণে দ্রুত শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে সিবিআই। দোষীর মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে বিস্তারিত যুক্তি পেশ করবে তারা। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস সিবিআই-এর মৃত্যুদণ্ডের আবেদন খারিজ করেন। জানিয়ে দেন যে অপরাধটি “বিরলতমের মধ্যে বিরল” শ্রেণিতে পড়ে না। বিচারক বলেন, “সিবিআই মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছিল। অভিযুক্তের আইনজীবী কারাদণ্ডের জন্য আবেদন জানান। তবে এই অপরাধ বিরলতমের মধ্যে বিরল নয়।”
বিচারক রায়ে বলেন, “ধর্ষণের সময় আঘাতের ফলে নির্যাতিতার মৃত্যু হয়েছে। তাই আমি দোষীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিচ্ছি, যার অর্থ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে।”
গত বছরের ৯ আগস্ট রাতে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হলে, নাইট শিফটে কর্মরত অবস্থায় বিশ্রাম নিতে গেলে ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়।
এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছে এবং দোষীর মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছে।
তবে সিবিআই রাজ্যের আপিলের বিরোধিতা করেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে যে মামলাটির তদন্ত তারাই করেছিল, ফলে শাস্তি অপর্যাপ্ত মনে হলে আপিলের অধিকারও তাদেরই রয়েছে।
বুধবার সিবিআই-এর পক্ষে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার আদালতে বলেন, “রাজ্য সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে না, কারণ এটি সিবিআই-এর করা মামলা। ফলে শাস্তির যথার্থতা বিচার করার একমাত্র অধিকার আমাদেরই।”
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, মামলাটি গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তারা সিবিআই, নির্যাতিতার পরিবার ও দোষীর বক্তব্য শুনবে। মামলাটি ২৭ জানুয়ারি শুনানি হবে।