দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমে ভয়াবহ বৃষ্টিপাত ও ধসের জেরে কার্যত ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। শিলিগুড়ি-সিকিমের ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধসের কারণে একাধিক স্থানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সেই কারণে রাস্তা মেরামতির জন্য চারদিনের জন্য সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (NHIDCL)।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৩ অক্টোবর দুপুর ১টা থেকে ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত এই জাতীয় সড়কে সমস্ত ধরনের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রশাসনের আশঙ্কা, এই সময়ে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের মানুষের পাশাপাশি পর্যটকদেরও মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
প্রবল বর্ষণে ২৯ মাইল থেকে গেলখোলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় ধস নেমেছে। একাধিক জায়গায় মাটি ও পাথর জমে রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধস না সরালে গাড়ি চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। অন্যদিকে, রোহিণী রাস্তাও এখনও সম্পূর্ণ সংস্কার হয়নি, ফলে বিকল্প পথেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কালিম্পং জেলা প্রশাসন পর্যটকদের জন্য বিকল্প ঘুরপথের ব্যবস্থা করছে যাতে তারা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন। তবুও স্বাভাবিক যাতায়াতে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা, কর্মজীবী ও পর্যটকরা।
এদিকে, পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। তারা জানতে চেয়েছেন— রাস্তা সংস্কারের বর্তমান অবস্থান কী এবং কতদিনে যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে পারে। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, “গাড়ি চলাচলের নিরাপত্তা এখন প্রশ্নের মুখে। দ্রুত রাস্তা সংস্কার না হলে এবং তথ্য জানানো না হলে আমরা সরাসরি কর্তৃপক্ষের দফতরে গিয়ে উত্তর চাইব।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের বর্ষায় পাহাড়ি ধসের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি, যা উত্তরবঙ্গের পরিবহন ও পর্যটন অর্থনীতিতে বড় আঘাত হানছে। প্রশাসন জানিয়েছে, রাস্তা সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ২৪ ঘণ্টা ধরে জরুরি মেরামতির কাজ চলছে।