Home রাজ্য দঃ ২৪ পরগনা বাল্যবিবাহ ঘিরে উদ্বেগ, ‘সেফ জোন’ হিসেবে ব্যবহৃত জয়নগর-সহ সুন্দরবনের কিছু এলাকা

বাল্যবিবাহ ঘিরে উদ্বেগ, ‘সেফ জোন’ হিসেবে ব্যবহৃত জয়নগর-সহ সুন্দরবনের কিছু এলাকা

0

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে তৎপর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে বাল্য বিবাহ বেড়ে চলেছে সুন্দরবন জুড়ে। এই বাল্যবিবাহের জন্য জয়নগরের প্রান্তিক কিছু এলাকাকে ‘সেফ জোন’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর তাতেই চিন্তায় প্রশাসন।

‘সেফ জোন’-এ আরও বেশি সচেতনতা প্রচার

বাল্যবিবাহের জন্য জয়নগরের প্রান্তিক কিছু এলাকাকে ‘সেফ জোন’ হিসেবে ব্যবহার করছে নাবালিকাদের পরিবার। কারণ, এই সব জায়গার দূরত্ব থানা থেকে বেশি। এই সব জায়গায় আত্মীয়-পরিচিতর বাড়িতে থেকে বিয়ের তোড়জোড় হলেও পুলিশ আসার আগেই অন্যত্র চলে গিয়ে বসানো হয়েছে বিয়ের আসর। আবার অনেক জায়গায় পুলিশ ও ব্লক প্রশাসন বিয়ে বন্ধ ও করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে জয়নগর-১ ব্লকের বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস সম্প্রতি বলেন, এই সব ‘সেফ জোন’গুলিতে আরও বেশি সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে আশা কর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মাধ্যমে। পাশাপাশি, সিভিক পুলিশ ও ভিলেজ পুলিশকেও ওই সব এলাকায় সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “এর আগে পরীক্ষা চলছিল বলে আমরা স্কুলে স্কুলে এই বিষয়ে সচেতনতা মূলক প্রচার করে উঠতে পারিনি। তবে এ বার আমরা স্কুলে কন্যাশ্রীর মেয়েদের দিয়ে এই বিষয়ে সচেতনতা মূলক কর্মসূচি করব। তবে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে এই বিষয়ে ইতিমধ্যে আমরা সচেতনতা মূলক কর্মসূচি করেছি। আমাদেরকে সবার আগে সচেতন না হলে কিছু করা যাবে না। তাই আশেপাশে এই জাতীয় ঘটনা ঘটলে আমাদেরকেই এগিয়ে এসে আটকাতে হবে”।

প্রতি বুথে নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ

জয়নগর-১ ব্লক ও জয়নগর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেল, জয়নগর-১ ব্লকের ধোসা, চালতাবেড়িয়া, রাজাপুর করাবেগ ও বামনগাছি পঞ্চায়েত এলাকাকেই ‘সেফ জোন’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জয়নগর থানা থেকে রাজাপুর-করাবেগের দূরত্ব ১৬ কিমি। ধোসার দূরত্ব ২০ কিমি, বামনগাছি ১৪ কিমি৷ চালতাবেড়িয়া ১৫-১৬ কিমি। অনেক নাবালিকা পরিবারের সঙ্গে এই সব এলাকাতে দূরের আত্মীয়- পরিজনের কাছে এসে আশ্রয় নিচ্ছে বিয়ের জন্য। বারুইপুর, কুলতলি, জয়নগর, মৈপীঠ, রায়দীঘি এলাকা থেকেই নাবালিকারা পরিবারের সঙ্গে চলে আসছে এই সব এলাকাতেই। থানা থেকে এই সব পঞ্চায়েত এলাকার দূরত্ব অনেক বেশি। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের লোকজন খবর পেয়ে যেতে না যেতেই ওই জায়গা থেকে হবু পাত্র-পাত্রী অন্যত্র চলে গিয়ে বিয়ের আয়োজন করে ফেলছে।

জয়নগর-১ ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস মিলিয়ে ৫টি নাবালিকার বিয়ে যেমন হয়েছে, তেমনই ৩টি জায়গায় বিয়ের আয়োজনের খবর পাওয়ার পর সেখানে গেলেও কোনো ভাবে খবর কানে যেতেই নাবালিকাকে নিয়ে পরিবার অন্যত্র চলে গিয়েছে। শোনা গিয়েছে, অন্য ব্লক এলাকাতে তার বিয়েও হয়েছে। জয়নগর থানা ও জয়নগর ১ নং ব্লক প্রশাসন থেকে ‘সেফ জোন’ এলাকার পঞ্চায়েতকেও সতর্ক করা হয়েছে প্রতি বুথে এই বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর জন্য। তাই এই বাল্য বিবাহকে আটকাতে পুলিশ, প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদেরও একটু এগিয়ে আসতে হবে। তা হলেই এই বাল্য বিবাহ বন্ধ হবে ও কন্যাশ্রী-সহ এ ধরনের প্রকল্পগুলির মুখ আরও উজ্জ্বল হবে।

আরও পড়ুন: উত্তরে বৃষ্টি শীঘ্রই, কবে ভিজতে পারে কলকাতা

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version