Home রাজ্য দঃ ২৪ পরগনা সুন্দরবনে বাঘরোলের মলেই মিলল প্লাস্টিক! বিপদের ইঙ্গিত, জানাল টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত...

সুন্দরবনে বাঘরোলের মলেই মিলল প্লাস্টিক! বিপদের ইঙ্গিত, জানাল টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত সমীক্ষা

fishing cat

সুন্দরবনের মতো এক সংবেদনশীল জীববৈচিত্র্যভিত্তিক এলাকায় প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, এখন রাজ্যের জাতীয় প্রাণী বাঘরোলের (Fishing Cat) মলেও মিলছে মাইক্রোপ্লাস্টিক! সম্প্রতি এক গবেষণায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সম্রাট চক্রবর্তী এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অধ্যাপক গৌতমকুমার সাহা, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের ড. তনয় মুখার্জি এবং শহরভিত্তিক এনজিও SHER-এর জয়দীপ কুণ্ডু। গবেষণা হয়েছে সুন্দরবনের পাকিরালয়, পাথরপ্রতিমা, লথিয়ান বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও হেনরি’স আইল্যান্ডে। ফান্ডিং এসেছে Wildlife Conservation Trust-এর BEES Grants থেকে।

কি ধরণের প্লাস্টিক মিলেছে?

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মল, জল, মাটি, উদ্ভিদ, মাছ, কাঁকড়া এবং রোডেন্টদের মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি রয়েছে। মল-নমুনায় পাওয়া প্লাস্টিক মূলত ফাইবার, কিছু কিছু বিডস, ফোম, শিট ও টুকরো আকারের। এগুলির মধ্যে রয়েছে হাই ও লো-ডেনসিটি পলিথিন, পলিপ্রপিলিন, পলিইথার এবং অন্যান্য রাসায়নিক যা প্রধানত পর্যটন ও শিল্পবর্জ্য থেকেই এসেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

দূষণের উৎস কী?

সমীক্ষার মতে, অবৈজ্ঞানিক পর্যটন, নিয়ন্ত্রহীন প্লাস্টিক ফেলা এবং জেলেদের ফেলে দেওয়া জালের মাধ্যমেই এই মাইক্রোপ্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়ছে।

এর প্রভাব কতটা ভয়াবহ?

অধ্যাপক সম্রাট চক্রবর্তীর মতে, এই প্লাস্টিক দূষণ মাৎস্যবিড়ালের অন্ত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এর ফলে তাদের আচরণগত পরিবর্তন, প্রজনন চক্রে সমস্যা, এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে এই সবই মাৎস্যবিড়ালের সংখ্যা হ্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই একই গবেষণায় এর আগেও বাঘরোলের মলে সীসা ও ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতিও ধরা পড়েছিল।

সচেতনতার পদক্ষেপও নিয়েছে গবেষণা দল

গবেষকরা সুন্দরবনে দুইটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করেছেন, যার মধ্যে একটি ছিল পাকিরালয়ে স্থানীয় শিক্ষকদের নিয়ে। এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের ১২টি জেলায় সচেতনতা শিবির এবং ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়েছে। মাছ ধরা, পর্যটন ও নদীপথে যাতায়াতের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনকেও এই কর্মসূচির মাধ্যমে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্লাস্টিক দূষণের ছাপ যদি ইতিমধ্যেই শৃঙ্খলের শীর্ষভাগে পৌঁছে যায়, তবে আগামী দিনে সুন্দরবনের ইকোসিস্টেমকে বাঁচাতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ নেই।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version