Home খবর রাজ্য সংশোধিত ওবিসি তালিকায় রাজ্যের মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র, অন্তর্ভুক্ত মোট জাতি ১৪০,

সংশোধিত ওবিসি তালিকায় রাজ্যের মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র, অন্তর্ভুক্ত মোট জাতি ১৪০,

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ওবিসি সংরক্ষণ ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। হাই কোর্টের রায়কে মেনে রাজ্যের ওবিসি (অনগ্রসর শ্রেণি) তালিকার সংশোধিত খসড়ায় অনুমোদন দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই তালিকাটি অনুমোদন পায়। অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের পেশ করা আপডেটেড তালিকা অনুযায়ী, আগের তালিকা থেকে ৬৬টি জাতির সংখ্যা কমিয়ে ৬৪টি করা হয়েছে এবং নতুন করে ৭৬টি জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে ওবিসি তালিকাভুক্ত মোট জাতির সংখ্যা দাঁড়াল ১৪০।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম জানান, “এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”

সরকারি সূত্রে খবর, রাজ্য ওবিসি কমিশনের সাম্প্রতিক সমীক্ষা এবং সুপারিশের ভিত্তিতেই এই তালিকা তৈরি হয়েছে। আগামী ৯ জুন থেকে শুরু হতে চলা বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে এই সংশোধনী বিল পেশ করা হবে। পাশ হলে তালিকাটি আইনি বৈধতা পাবে।

উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্ট ২০২৪ সালের মে মাসে রাজ্যের ২০১০-২০১২ সালের মধ্যে করা ৭৭টি ওবিসি অন্তর্ভুক্তিকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল। হাইকোর্টের মতে, ওই অন্তর্ভুক্তি ছিল ধর্মভিত্তিক, যা সংবিধানবিরোধী। এর ফলে প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হয়ে যায়। যদিও যাঁরা ইতিমধ্যেই সেই শংসাপত্রের মাধ্যমে সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে রায় প্রযোজ্য নয়।

এই প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার নতুন তালিকা তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়, যেখানে তারা তিন মাস সময় চায় নতুন সমীক্ষা সম্পূর্ণ করার জন্য। মামলার পরবর্তী শুনানি জুলাইয়ে নির্ধারিত। অন্যদিকে, হাইকোর্টও এই সমীক্ষা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন তোলে। ৬ মে-র শুনানিতে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ জানতে চান, বাতিল হওয়া জাতিগুলিকেই কেন আবার গুরুত্ব দেওয়া হল? সাধারণ মানুষ কেন এই সমীক্ষার কথা জানতে পারেননি? কেন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি?

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সমীক্ষার তথ্য রাজ্যের সব স্তরে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং গ্রামপঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এ বিষয়ে রাজ্য ও কমিশনকে আগামী ১৯ জুনের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে।

এদিকে নতুন তালিকা নিয়ে রাজনীতির পারদ চড়ছে। বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, এটি ধর্মভিত্তিক ভোটব্যাঙ্ক তৈরির চেষ্টা। তবে সরকার পক্ষের দাবি, এই পদক্ষেপ সংবিধান মেনে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীগুলিকে সংরক্ষণের মাধ্যমে মূলস্রোতে আনার প্রচেষ্টা।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version