মেদিনীপুর: ছয় বছর ধরে ভুল পরিচয়ের কারণে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন নলিনী চৌধুরী। ২০১৮ সালে জামিন পেলেও ভুল তথ্যের কারণে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার ডিস্ট্রিক্ট লিগাল সার্ভিসেস অথরিটি (ডিএলএসএ)-র প্রচেষ্টায় অবশেষে মুক্তি পেলেন ৫২ বছর বয়সী এই মহিলা।
ঘটনার সূত্রপাত
২০১৭ সালে, কালাইকুন্ডা বিমানঘাঁটির উচ্চ নিরাপত্তা এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরে বেড়ানোর সময় নলিনীকে আটক করে খড়গপুর পুলিশ। পরে জানা যায়, তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছিলেন এবং ঝাড়খণ্ডের পলামু থেকে নিজের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৭ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩-এর ৩ ও ৭ ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করে।
ভুল পরিচয়ের কারণে জটিলতা
নলিনীর ভোটার কার্ডে তাঁর নাম ভুলক্রমে লালোনি দেবী এবং ঠিকানা উত্তর প্রদেশ বলে উল্লেখ করা ছিল। এই ভুলের কারণে তাঁর পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং জামিন পেলেও তাঁকে বাড়ি ফেরানো সম্ভব হয়নি।
পরিবার খুঁজে পাওয়ার প্রচেষ্টা
ডিএলএসএ-র সচিব শহিদ পারভেজ নিজে এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেন। তিনি গুগলে খোঁজখবর নেওয়া থেকে শুরু করে হ্যাম রেডিও অপারেটরদের সহায়তা এবং ঝাড়খণ্ডের আইনি সাহায্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে নলিনীর পরিবারকে খুঁজে বের করেন। নলিনীর স্বামী লালজি চৌধুরী এবং ভাই সত্যেন্দ্র চৌধুরী তাঁর ছবি দেখে সনাক্ত করেন।
পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন
বৃহস্পতিবার নলিনীর পরিবারের সদস্যরা মেদিনীপুরে পৌঁছান। শুক্রবার তাঁরা নলিনীর সঙ্গে দেখা করেন। ডিএলএসএ ২,০০০ টাকার জামিন বন্ড প্রদান করলে তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ডিএলএসএ-র বক্তব্য
শহিদ পারভেজ বলেন, “এটি একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং জটিল বিষয় ছিল। আমরা নলিনীর পরিবারকে খুঁজে বের করতে পেরে এবং তাঁকে বাড়ি ফেরাতে পেরে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।”
অবশেষে, ছয় বছরের দীর্ঘ কারাবাস শেষে নলিনী তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছেন। এই ঘটনা আইনি সহায়তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে।