Home বিজ্ঞান সূর্যের শক্তি কি এবার হাতের মুঠোয়? বিশ্বের শক্তিশালীতম চুম্বক জোড়া লাগাতে প্রস্তুত...

সূর্যের শক্তি কি এবার হাতের মুঠোয়? বিশ্বের শক্তিশালীতম চুম্বক জোড়া লাগাতে প্রস্তুত ভারত-সহ ৩০ দেশ

ছবি: ITER

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী চুম্বক তৈরি করতে একসাথে কাজ করছেন ভারতসহ ৩০টি দেশের বিজ্ঞানীরা। আন্তর্জাতিক থার্মোনিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল রিঅ্যাক্টর (ITER) প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই চুম্বক ব্যবহার হবে নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণায়, যা আগামী দিনের পরিচ্ছন্ন শক্তির সম্ভাবনা উন্মোচন করতে চলেছে।

প্রকল্পের চূড়ান্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘সেন্ট্রাল সোলেনয়েড’ সম্প্রতি তৈরি করে সফলভাবে পরীক্ষা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই মুহূর্তে তার সংযোজনের কাজ পুরোদমে চলছে। ITER-র এই বিশাল প্রকল্প দক্ষিণ ফ্রান্সে নির্মিত হচ্ছে এবং এতে অংশ নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারত।

ITER প্রকল্পে নিউক্লিয়ার ফিউশন ঘটিয়ে পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। হাইড্রোজেনের দুটি আইসোটোপ—ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম—কে প্রচণ্ড উত্তাপে গলিয়ে ১৫ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে দেওয়া হবে, যা সূর্যের কেন্দ্রের থেকেও ১০ গুণ বেশি। এই অবস্থায় প্লাজমা তৈরি হবে, যা একটি টোকামাক নামক ডোনাট-আকৃতির চেম্বারে রাখা হবে। সুপারকন্ডাক্টিং চুম্বকের সাহায্যে প্লাজমাকে একটি অদৃশ্য খাঁচায় আটকে রাখা হবে, যাতে এটি ঠান্ডা হয়ে না পড়ে।

ITER-র ডিরেক্টর জেনারেল পিয়েত্রো বারাবাসচি বলেছেন, “এটা একেবারে যেমন, যেমন একটি বোতলের ভিতরে রাখা হয় মদ—বোতলটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ না থাকলে মদ রাখা যেত না।”

মূলত ২০২১ সালে এই চুম্বকের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বিলম্বিত হয়। তবে বারাবাসচির মতে, “বিলম্বের সময় অতিক্রান্ত, এখন ITER-র ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে কাজ এগোচ্ছে।” আগামী ২০৩৩ সালে প্লাজমা উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

ফিউশন এনার্জি নিয়ে সারা বিশ্বেই বিনিয়োগ বেড়েছে। অনেক বেসরকারি উদ্যোগ বলছে, তারা আগামী এক দশকের মধ্যেই বানিজ্যিক ফিউশন রিঅ্যাক্টর তৈরি করতে পারবে।

ভারত ২০০৫ সালে ITER প্রকল্পে যোগ দেয় এবং নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। দেশের তরফে ইন-কাইন্ড ডেলিভারি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্স সফরের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এই প্রকল্পের ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version