Home খেলাধুলো ফুটবল আইএসএল ২০২৪-২৫: অবিশ্বাস্য জয় ইস্টবেঙ্গলের, দু’ গোলে পিছিয়ে থেকে ২১ মিনিটে চার...

আইএসএল ২০২৪-২৫: অবিশ্বাস্য জয় ইস্টবেঙ্গলের, দু’ গোলে পিছিয়ে থেকে ২১ মিনিটে চার গোল পঞ্জাবকে  

এ দিনের জয়ের নায়কেরা। ছবি Indian Super League-এর 'X' থেকে নেওয়া।

ইস্টবেঙ্গল এফসি: ৪ (হিজাজি মাহের, বিষ্ণু পুথিয়া বলাপ্পিল, নংমেইকাপম সুরেশ মেইতেই আত্মঘাতী, ডেভিড লাললালসাঙ্গা)

পঞ্জাব এফসি: ২ (আসমির সুলজিচ, এজেকিউয়েল ভিদাল)

কলকাতা: এ ভাবেও জেতা যায়! মঙ্গলবার এক অবিশ্বাস্য ফুটবল ম্যাচের সাক্ষী থাকলেন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের দর্শকরা। আইএসএল-এর ইতিহাসে এ রকম ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে পড়ে না। ০-২ গোলে পিছিয়ে থেকে ৪-২ গোলে জয়। এবং সেই ৪টে গোল এল মাত্র ২১ মিনিটে। প্রথম গোল ম্যাচের ৪৬ মিনিটে এবং চতুর্থ গোল ম্যাচের ৬৭ মিনিটে।

এই অত্যাশ্চর্য খেল দেখাল এ বারের আইএসএল লিগে একাদশ স্থানে থাকা দল ইস্টবেঙ্গল। লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে থাকা পঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে অস্কার ব্রুজোনের লাল-হলুদ বাহিনীর এমন নাটকীয় জয় চলতি লিগের অন্যতম সেরা অঘটন।

মঙ্গলবার কলকাতার বিবেকানন্দ ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল এফসি ৪-২ গোলে হারাল পঞ্জাব এফসি-কে। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় পঞ্জাব। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই খেল দেখাতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। তাদের প্রথম গোল আসে ম্যাচের ৪৬ মিনিটে। দ্বিতীয় গোল ম্যাচের ৫৪ মিনিটে। ঠিক ছ’ মিনিট যেতে না যেতেই তৃতীয় গোল এবং চূড়ান্ত গোল এল ম্যাচের ৬৭ মিনিটে। অর্থাৎ মাত্র ২১ মিনিটে কেল্লা ফতে। পঞ্জাবকে উড়িয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল।

প্রথমার্ধে পঞ্জাবের ২টি গোল

শুরু থেকেই আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। আজ কিন্তু লাল-হলুদ বাহিনীকে বেশ আত্মবিশ্বাসী লাগল। তারা আক্রমণে উঠে যাচ্ছিল ঘন ঘন এবং দশ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগও পেয়েছিল। বাঁ দিক থেকে ক্লেইটন সিলভার ফ্রি-কিকে পা লাগিয়ে পঞ্জাবের জালে বল জড়িয়ে দেন ডেভিড লাললালসাঙ্গা। কিন্তু তিনি অফসাইডে থাকায় গোল বাতিল হয়ে যায়।

এর পর থেকেই ম্যাচের উপর নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ কমে যেতে থাকে ইস্টবেঙ্গলের এবং সেই সুযোগে গোল করে এগিয়ে যায় পঞ্জাব। ২২ মিনিটের মাথায় প্রতি-আক্রমণে ডান দিক দিয়ে উঠে আসা আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার নর্বের্তো ভিদাল ক্রস ভাসিয়ে দেন দূরের পোস্টের সামনে থাকা হাঙ্গেরিয়ান ফরোয়ার্ড আসমির সুলজিচকে। সুলজিচের কোনাকুনিা শটে ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়িয়ে যায়। পঞ্জাব এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।

ইস্টবেঙ্গল আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে, কিন্তু তাতে তেমন বিষ ছিল না। তারা একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু ফিনিশিং হচ্ছিল না ঠিকমতো। এরই মাঝে ম্যাচের ৩৯ মিনিটে আবার গোল করে এগিয়ে থাকার ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় পঞ্জাব। বাঁ দিকে থ্রো ইন থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়িয়ে দেন লিওনেল মেসির দেশের ফুটবলার এজেকিউয়েল ভিদাল। প্রথমার্ধে পঞ্জাব এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

দ্বিতীয়ার্ধের ২১ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের ৪ গোল

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে না হতেই খেল দেখাতে শুরু করে লাল-হলুদ বাহিনী। নিখুঁত সেটপিসে গোল করে ব্যবধান কমান জর্ডনের ফুটবলার হিজাজি মাহের। প্রথমার্ধের মতো এ বারেও ডান দিক থেকে পঞ্জাবের বক্সের মধ্যে মাপা ফ্রি-কিক পাঠান ব্রাজিলীয় তারকা ক্লেইটন সিলভা। সেই ফ্রি-কিকে নিখুঁত ভাবে মাথা ঠেকিয়ে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম গোলটি করেন মাহের।

৮ মিনিট যেতে না যেতেই ম্যাচে সমতা আনে অস্কার ব্রুজোনের দল। ডান দিক থেকে মহম্মদ রকিপের হাওয়ায় ভাসানো ক্রস পঞ্জাবের নংমেইকাপম সুরেশ মেইতেই ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল গিয়ে পড়ে সম্পুর্ণ অরক্ষিত বিষ্ণু পুথিয়া বলাপ্পিলের পায়ে। পঞ্জাবের বক্সে ঢুকে সোজা গোলে শট নেন তিনি।

ইস্টবেঙ্গলের তৃতীয় গোল আসে ঠিক ৬ মিনিট পরে। আগের বল বাঁচাতে গিয়ে বিষ্ণুর কাছে বল দিয়ে দিয়েছিলেন সুরেশ মেইতেই। এ বার সেই মেইতেইয়ের আত্মঘাতী গোলে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায় ৩-২ গোলে। ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমারের ক্রস নিজেদের গোলের দিকে মুখ করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন সুরেশ।

এর ৭ মিনিট পরে চূড়ান্ত গোল। ম্যাচের ১০ মিনিটে যে লাললালসাঙ্গার গোল অফসাইডের ফাঁদে পড়ে বাতিল হয়ে গিয়েছিল, সেই ডেভিড লাললালসাঙ্গাই চতুর্থ ও শেষ গোলটি করেন। এই গোলে অবশ্য বিষ্ণুর অবদান ছিল। পঞ্জাবের বক্সের সামনে বাঁ দিক থেকে ক্রস বাড়ান বিষ্ণু। তাতে হেড করে ইস্টবেঙ্গলকে ৪-২ গোলে এগিয়ে দেন লাললালসাঙ্গা।

হতচকিত পঞ্জাবের শরীরী ভাষায় হার মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত। এর পরেও আরও গোলের সুযোগ পেয়েছিল লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু এ দিন তাদের জয় শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানেই থেমে থাকে।   

লিগ টেবিলে কে কোথায়

এ দিন ইস্টবেঙ্গলের অবিশ্বাস্য জয়ের পরেও লিগ টেবিলে কারও কোনো স্থান পরিবর্তন হয়নি। পঞ্জাব এফসি থাকল পঞ্চম স্থানেই। ১১ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ১৮ পয়েন্ট। আর ইস্টবেঙ্গল ১১ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করে থাকল একাদশ স্থানে।       

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version