কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০০-৬ (বেঙ্কটেশ আয়ার ৬০, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী ৫০, অজিঙ্ক রাহানে ৩৮, কামিন্দু মেন্ডিস ১-৪)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১২০ (১৬.৪ ওভার) (হাইনরিখ ক্লাসেন ৩৩, বরুণ চক্রবর্তী ৩-২২, বৈভব অরোরা ৩-২৯, আন্দ্রে রাসেল ২-২১)
কলকাতা: ঘরের মাঠে জয়ে ফিরল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সহজেই ধরাশায়ী করল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। ক্রিকেট সমালোচকদের উপযুক্ত জবাব দিলেন বেঙ্কটেশ আয়ার। আবার রানে ফিরলেন অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে। আর অঙ্গকৃশ রঘুবংশী তাঁর ফর্ম বজায় রাখলেন। ইনিংসের শেষ দিকে খেলা দেখালেন মারকুটে রিঙ্কু। তাঁদের ব্যাটে ভর করে কলকাতা পৌঁছে গেল ৬ উইকেটে ২০০ রানে। কিছুটা হাইনরিখ ক্লাসেন হায়দরাবাদের কোনো ব্যাটারই সে ভাবে রান পেলেন না। বরুণ চক্রবর্তী, বৈভব অরোরার বোলিংয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করল হায়দরাবাদ। ইনিংসের ২০ বল বাকি থাকতেই তারা গুটিয়ে গেল মাত্র ১২০ রানে। হায়দরাবাদের তিন ব্যাটিং সম্পদ ট্র্যাভিস হেড, ইশান কিশন এবং হাইনরিখ ক্লাসেনকে তুলে নিয়ে (২৯ বলে ৩ উইকেট) ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন বৈভব অরোরা।
১৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ঘুরে দাঁড়াল কলকাতা
বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে কেকেআর-কে ব্যাট করতে পাঠায় হায়দরাবাদ। দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক আর সুনীল নারাইনকে দ্রুত হারায় কেকেআর। ডি কককে (৬ বলে ১ রান) তুলে নেন প্যাট কামিন্স এবং সুনীল নারাইন (৭ বলে ৭ রান) শিকার হন মহম্মদ শামির। মাত্র ১৬ রানে ২টি উইকেটে হারায় কেকেআর। এর পরই অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে এবং অঙ্গকৃশ রঘুবংশীর ব্যাটে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। রাহানে-রঘুবংশী জুটি দলের রান টেনে নিয়ে যান ৯৭-এ। ৮.৩ ওভারে এই জুটি যোগ করে ৮১ রান। ২৭ বলে ৩৮ রান করে প্রথমে ফিরে যান রাহানে জিশান আনসারির বলে হাইনরিখ ক্লাসেনকে ক্যাচ দিয়ে। দলের স্কোরে ৯ রান যোগ হওয়ার পরে কামিন্দু মেণ্ডিসের বলে হর্ষল পটেলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রঘুবংশী। ৩২ বলে অর্ধশত রান করেন তিনি।

সমালোচকদের জবাব দিলেন ভেঙ্কটেশ আয়ার। ছবি Indian Premier League ‘X’ থেকে নেওয়া।
দলের রান তখন ৪ উইকেটে ১০৬। বেঙ্কটেশ আয়ারের সঙ্গী হলেন রিঙ্কু সিংহ। এবং দু’জনে মিলে সমস্ত সমালোচনার জবাব দিলেন। পৌনে ২৪ কোটি দিয়ে কেনা বেঙ্কটেশ এ বারের আইপিএল-এ রান পাচ্ছিলেন না। রান পাচ্ছিলেন না মারকুটে প্লেয়ার রিঙ্কু। দুজনের ব্যাটে উঠল ঝড়। পঞ্চম উইকেটে তাঁরা যোগ করলেন ৯১ রান। ৩টে ছয় আর ৭টা চারের সাহায্যে ২৯ বলে ৬০ রান তুলে বেঙ্কটেশ যখন হর্ষল পটেলের শিকার হলেন তখন কেকেআর পৌঁছে গেছে ১৯৭-এ। শেষ ৩ বলের জন্য রিঙ্কুর সঙ্গী হলেন আন্দ্রে রাসেল। ইনিংসের শেষ বলে রাসেল রান আউট হয়ে ফিরে গেলে। কলকাতা শেষ করল ৬ উইকেটে ২০০ রানে। ১৭ বলে ৩২ করে নট আউট থাকলেন রিঙ্কু সিং।
অসহায় আত্মসমর্পণ হায়দরাবাদের
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জবাব দিতে পারল না। হায়দরাবাদের ব্যাটাররা মোকাবিলা করতে পারল না কলকাতার বোলারদের, বিশেষ করে বরুণ চক্রবর্তী, বৈভব অরোরাকে। ট্র্যাভিস হেড, অভিষেক শর্মা এবং ইশান কিশন ফিরে গেলেন মাত্র ৯ রানের মধ্যে। হেড ও কিশনকে তুলে নিলেন বৈভব আর অভিষেককে ফেরত পাঠালেন হর্ষিত রানা। এর পর নীতীশ রেড্ডি আর কামিন্দু মেন্ডিস কিছুটা চেষ্টা করলেন পতন ঠেকানোর। কিন্তু দলের স্কোর বেশি দূর নিয়ে যেতে পারলেন না। দলের ৪৪ রানের মাথায় ফিরে গেলেন নীতীশ (১৫ বলে ১৯ রান) রাসেলের শিকার হয়ে। আরও ২২ রান যোগ হওয়ার পরে নারাইনের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন মেন্ডিস।
জয়ের পরে কেকেআর। ছবি: অরিন্দম দাস।
তার পর কার্যত একাই লড়ে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার হাইনরিখ ক্লাসেন। কিন্তু সঙ্গী হিসাবে বিশেষ কাউকে পেলেন না। শেষ পর্যন্ত দলের ১১২ রানে ক্লাসেন (২১ বলে ৩৩ রান) ফিরে যেতেই প্যাট কামিন্স, হর্ষল পটেল এবং সিমরজিৎ সিংহ বিদায় নিলেন মাত্র ৮ রানের মধ্যে। হায়দরাবাদ গুটিয়ে গেল মাত্র ১২০ রানে ৩.২ ওভার বাকি থাকতেই। ৮০ রানে তারা হেরে গেল কেকেআর-এর কাছে। শেষের দিকে ৩ উইকেট দখল করে নিলেন বরুণ ২২ রান দিয়ে।
এই ম্যাচের পর ৪ ম্যাচ থেকে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে আইপিএল টেবিলে কেকেআর থাকল পঞ্চম স্থানে। আর সমসংখ্যক ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে এসআরএইচ (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ) থাকল ১০ দলের টেবিলের একদম নীচে।