দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪২৮-৫ (রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ১০৮, আইডেন মার্করাম ১০৬, কুইন্টন ডি কক ১০০, দিশান মদুশঙ্কা ২-৮৬)
শ্রীলঙ্কা: ৩২৬ (৪৪.৫ ওভার) (চরিত অসলঙ্কা ৭৯, কুশল মেন্ডিস ৭৬, গেরাল্ড কোয়েৎজি ৩-৬৮, কাগিসো রাবাদা ২-৫০)
দিল্লি: অবিশ্বাস্য ঘটনা! বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে শনিবারের দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ অমর হয়ে থাকবে, যত দিন না এই রেকর্ডগুলো ভাঙে। এই ম্যাচে হারজিতটা কোনো খবর নয়। খবর হল এক ম্যাচে তিনটি বিশ্ব রেকর্ড – এক, বিশ্বকাপে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান; দুই, এক ইনিংসে ৩টি সেঞ্চুরি এবং তিন, দ্রুততম সেঞ্চুরি। এই সবের কৃতিত্ব দক্ষিণ আফ্রিকার।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্যাচে টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। সেই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫০ ওভারে তোলে ৫ উইকেটে ৪২৮ রান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান। এক ইনিংসে তিনজন সেঞ্চুরি করেন – রাসি ভ্যান ডার ডাসেন, এইডেন মার্করাম এবং কুইন্টন ডি কক। এই ঘটনাটাও বিশ্বকাপে আগে কখনও ঘটেনি। আর এইডেন মার্করাম তাঁর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে। এই রানে ১৪টা চার আর ৩টে ছয় ছিল। এর আগে বিশ্বকাপে কোনো ব্যাটার এত কম বলে সেঞ্চুরি করেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেট পড়ে যায় মাত্র ১০ রানে। দিশান মদুশঙ্কার বলে ৮ রান করে আউট হন টেম্বা বাভুমা। এর পরেই জুটি বাঁধেন কুইন্টন ডি কক এবং রাসি ভ্যান ডার ডাসেন। ডি কক আর ডাসেন দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ২০৪ রান। দলের ২১৪ রানে আউট হন ডি কক। ২১৪ রান ওঠে ৩০.৪ ওভারে।
এর পর ব্যাটিং-এ আরও বড়ো ঝড় তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের বাকি ১৯.২ ওভারে রান ওঠে আরও ২১৪। এর মূলে রয়েছেন এইডেন মার্করাম। বাকি ব্যাটারদের নিয়ে তিনি দলের রান পৌঁছে দেন ৩৮৩ রানে। ৩৮৩ রানে পঞ্চম উইকেট পড়ার পর দুই ব্যাটার ডেভিড মিলার এবং মার্কো জ্যানসেন ১৭ বলে যোগ করেন ৪৫ রান। ২১ বলে ৩৯ করে মিলার এবং ৭ বলে ১২ করে জ্যানসেন নট আউট থাকেন।
লড়াই করল শ্রীলঙ্কা
জয়ের জন্য রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা যে ক্রীড়া প্রদর্শন করলেন তা-ও কিছু কম নয়। তারা দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০২ রানে হেরে গেল বটে, কিন্তু যে দ্রুততায় তারা রান করল তা-ও খুব কমই ঘটে। তারা ৩২৬ রান করল ৪৪.৫ ওভারে। এই রান যদি তারা প্রথম ব্যাট করতে নেমে করত, তা হলে সেটাই হয়তো জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান হত।
দলের প্রথম উইকেট ১ রানে পড়ে যাওয়ার পরে কুশল পেরেরার সঙ্গী হলেন কুশল মেন্ডিস। পেরেরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন কতটা বিধ্বংসী হতে পারেন মেন্ডিস। ১৫ বলে ৭ রান করে পেরেরা যখন আউট হলেন তখন দলের রান উঠে গিয়েছে ৬৭-তে। ৬.৪ ওভারে উঠল ৬০ রান, যার বেশিটাই এল মেন্ডিসের বিধ্বংসী ব্যাট থেকে। এর পর মেন্ডিসের সঙ্গী হলেন সদিরা সমরবিক্রম। দু’জনে ৪২ রান যোগ করলেন ৪.৫ ওভারে। দলের ১০৯ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ার পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে শ্রীলঙ্কার। কিন্তু রান ওঠার গতি তারা কখনও কমায়নি। এর জন্য কৃতিত্ব দিতে হয় চরিত অসলঙ্কা (৬৫ বলে ৭৯ রান) এবং দলের অধিনায়ক দাসুন শনককে (৬২ বলে ৬৮ রান)। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপুল স্কোরের সামনে শ্রীলঙ্কার এই লড়াইও দেখার মতো। শেষ পর্যন্ত ৩২৬ রানে ইনিংস শেষ করে শ্রীলঙ্কা ১০২ রানে হেরে গেল।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ