এনসিইআরটি সম্প্রতি দ্বাদশ শ্রেণির নতুন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছে, যেখানে অযোধ্যার ইতিহাস নিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন বইয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে বাবরি মসজিদ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঘটনা। পুরোনো বইয়ে অযোধ্যার ইতিহাসের বিবরণ ছিল চার পৃষ্ঠায়, যা নতুন বইয়ে কমিয়ে দুই পৃষ্ঠায় আনা হয়েছে।
নতুন পাঠ্যপুস্তকে লেখা হয়েছে, অযোধ্যায় যেখানে রামমন্দির তৈরি হচ্ছে, সেখানে আগে ছিল তিনটি গম্বুজওয়ালা এক স্থাপত্য। বলা হয়েছে, ‘‘সেখানে ছিল তিনটি গম্বুজওয়ালা এক স্থাপত্য। যা ১৫২৮ সালে তৈরি করা হয়েছিল রামের জন্মস্থলে। যার দেওয়াল জুড়ে ছিল হিন্দু ধর্মের প্রতীক এবং হিন্দু পুরাণের নিদর্শনের ছড়াছড়ি।’’
১৯৮৬ সালে ওই স্থাপত্যের তালা খোলার পর হিন্দু-মুসলিম বিরোধের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। বইয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘হিন্দুরা মনে করেছিলেন, রাম জন্মভূমি এবং ভগবান শ্রীরামকে নিয়ে তাঁদের আবেগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। অন্য দিকে মুসলিম সম্প্রদায় চেয়েছিল ওই স্থাপত্যের উপর তাঁদের অধিকার কায়েম করতে।’’
নতুন বইয়ে ২০১৯ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে আদালতের নির্দেশে অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি হয়েছে এবং মুসলিমদের মসজিদের জন্য আলাদা জমি দেওয়া হয়েছে। বইয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মসজিদ তৈরির জন্য দেওয়া হয়েছে আলাদা জমি। আর এই সিদ্ধান্ত সমাজের অধিকাংশ মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছেন। স্পর্শকাতর একটি বিষয়কে কী ভাবে দু’পক্ষের সম্মতিক্রমে গণতান্ত্রিক ভাবে সমাধান করা যায়, তার ধ্রুপদী উদাহরণ হল অযোধ্যার রায়।’’
এনসিইআরটির মতে, এই পরিবর্তনগুলির উদ্দেশ্য হচ্ছে ছাত্রদের সামনে ইতিহাসের ইতিবাচক দিকটি তুলে ধরা। তাদের বক্তব্য, ‘‘এই সবই করা হয়েছে পড়ুয়াদের সামনে ইতিহাসের ইতিবাচক বিষয়টি তুলে ধরার জন্য। সাম্প্রদায়িক অশান্তির কথা দেশের ভবিষ্যতকে জানানোর প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছে তারা।’’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পর এটি এনসিইআরটি দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের চতুর্থ সংশোধন।
আরও পড়ুন: কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডে ৪৫ মৃত্যু, উপসাগরীয় দেশগুলিতে কেন কাজের সন্ধানে যান ভারতীয় শ্রমিকরা?