সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ৫৭.১ গিগাটন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১.৩ শতাংশ বেশি। এই বৃদ্ধি করোনা মহামারি পরবর্তী দশকের আনুমানিক গড় হারের চেয়েও বেশি। সতর্ক করে বলা হয়েছে, এই তথ্য আগামী কয়েক বছরের জন্য গুরুতর সংকেত বহন করছে। ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সম্মেলন। তার আগে এই সতর্কবার্তা কপালে ভাঁজ ফেলার মতো।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ বিষয়ক প্রোগ্রামের (UNEP) একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা সতর্ক করেছেন, এই পরিস্থিতি যেন একটি ‘ইনটেনসিভ কেয়ার’ ইউনিটে প্রবেশ করার মতো।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান নীতিগুলি চালু থাকলে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের তাপমাত্রা ৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে, সব দেশ তাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের (NDC) লক্ষ্য পূরণ করলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২.৬-২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ হবে বলে আশঙ্কা।
ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (UNEP) এর এমিশন গ্যাপ রিপোর্টের ১৫তম সংস্করণে জানা যায়, শুধুমাত্র ভারত, চীন, মেক্সিকো, তুরস্ক এবং জাম্বিয়া তাদের নির্ধারিত NDC লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে রয়েছে। অন্যদিকে, জি-২০ দেশগুলোর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ২০২৩ সালে আরও বেড়েছে, যা বৈশ্বিক মোট নির্গমনের ৭৭ শতাংশের জন্য দায়ী।
UNEP নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসেন সাংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “এই মুহূর্তেই বিশ্ব জুড়ে এমন এক বিপুল উদ্যোগ প্রয়োজন যা আগে কখনো দেখা যায়নি — COP29 সম্মেলনে এর বাস্তবায়ন শুরু হওয়া দরকার।” পরিবেশ কর্মী হরজিত সিং বলেছেন, “COP29-এর নেতা এবং বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর উচিত দায়িত্ব পালন করা।”
এই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, বর্তমান নীতিগুলির অধীনে ২০৩০ সালে বিশ্বজুড়ে কার্বন নির্গমন ৫৩ থেকে ৫৯ গিগাটনের মধ্যে থাকবে, যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় লক্ষ্যের থেকে অনেক দূরে। ২০৩০ সালের মধ্যে ২০১৯ সালের তুলনায় কার্বন নির্গমন ৪৩ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য থাকলেও বর্তমান প্রবণতা সেই লক্ষ্য অর্জন থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।