জেলবন্দি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির আশা আবারও ফিকে হয়ে গেল। এক দুর্নীতির মামলায় জামিন পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে নতুন একটি মামলায় পুনরায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) দ্বিতীয় তোষাখানা মামলায় তাঁকে জামিন দেয়। এই মামলা ছিল একটি দামি বুলগারি গয়নার সেট কম দামে কেনার অভিযোগ সংক্রান্ত। এই রায়ের পর তাঁর মুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল।
তবে, কিছুক্ষণের মধ্যেই রাওয়ালপিন্ডি পুলিশ তাঁকে রাতে আটক করে। এই গ্রেফতারের কারণ হিসেবে নিউ টাউন থানায় একটি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ, ইমরান খান জেলে থাকার সময় রাওয়ালপিন্ডিতে ২৮ সেপ্টেম্বর একটি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলাটি সন্ত্রাসবাদ এবং অন্যান্য অভিযোগে দায়ের করা হয়।
মামলার অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের লঙ্ঘন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জনসমাবেশ করা, পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি, পুলিশের যানবাহনের ক্ষতি এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করা। ইমরান খানের মুক্তির সম্ভাবনা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রী আত্তা তারার। তিনি বলেন, ইমরান খান ২০২৩ সালের ৯ মে অশান্তির সঙ্গে সম্পর্কিত আটটি মামলায় অভিযুক্ত এবং মুক্তি পাওয়ার আগে তাঁকে সেসব মামলায়ও জামিন নিতে হবে।
ডন আরও জানিয়েছে, ইমরান খানকে মুক্তি পেতে হলে ইসলামাবাদ, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডি জুড়ে দায়ের হওয়া প্রায় দুই ডজন মামলায় জামিন নিতে হবে। ইসলামাবাদ পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে মোট ৬২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে তাঁর দল পিটিআই জানায়, পঞ্জাব প্রদেশে আরও ৫৪টি মামলা করা হয়েছে।
এছাড়াও বুধবার আদিয়ালা জেলে একটি জিবিপি ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মামলার শুনানি হয়। আদালত ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে তাঁদের কাছে পাঠানো প্রশ্নের উত্তর জমা দিতে বলেন। বুশরা বিবির চিকিৎসাজনিত কারণে আদালতে হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন মঞ্জুর করা হয় এবং মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২২ নভেম্বর ধার্য করা হয়।
একইদিন লাহোর হাইকোর্ট ইমরান খানের বোন নুরিন নিয়াজির একটি আবেদন খারিজ করে। আবেদনটি ছিল পঞ্জাব এবং ইসলামাবাদের সব মামলায় ইমরান খানের জামিন চেয়ে। আদালত উল্লেখ করে যে জামিনের আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই ব্যক্তিগত ভাবে জমা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁর দল পিটিআই দাবি করেছে, এসব মামলা সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।