ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া ব্লক ৮১টির মধ্যে ৫১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে, যেখানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৩০টি আসনে এগিয়ে। এই ফলাফল আবারও প্রমাণ করেছে যে বিজেপির শক্তিশালী প্রচার সত্ত্বেও জেএমএম-নেতৃত্বাধীন জোট তাদের অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিজেপি বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরে প্রচারণা চালালেও তা প্রত্যাশিত ফল আনতে পারেনি। কী কারণে এই ব্যর্থতা? দেখে নেওয়া যাক পাঁচটি অন্যতম কারণ।
১. সহানুভূতির ফ্যাক্টর
মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর দুর্নীতির অভিযোগ এবং গ্রেফতার বিজেপির প্রচারের একটি প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। তবে এটি উল্টো ফল দেয়। সোরেন জেলে থাকা অবস্থায় তাঁর স্ত্রী কল্যাণী সোরেন জনগণের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হন এবং “বৈষম্যের শিকার” সহানুভূতিতে জনসমর্থন আদায় করেন।
২. বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ইস্যু
বিজেপি প্রচারে “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ” একটি বড় ইস্যু হিসেবে তোলা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতো শীর্ষ নেতারা দাবি করেন যে ঝাড়খণ্ডের কিছু অঞ্চল “মিনি-বাংলাদেশ” হয়ে উঠছে। তবে শাসক জোট ভোটারদের বুঝিয়ে দেয় যে এটি বিজেপির “ভাগ করো এবং শাসন করো” নীতি। এই ইস্যু বিজেপির বিরুদ্ধে কাজ করে।
৩. মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর অভাব
বিজেপি কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেনি, যা ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, ইন্ডিয়া ব্লক পরিষ্কার করে দেয় যে তারা হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে নির্বাচন লড়ছে। সুনির্দিষ্ট নেতৃত্বের অভাবে বিজেপি জনসমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়।
৪. ইডি ও সিবিআই তদন্ত
অনেকের মতে, ইডি ও সিবিআই-এর অভিযান শাসক জোটের পক্ষে কাজে লাগে। জেএমএম এবং অন্যান্য ইন্ডিয়া ব্লক দলের নেতারা দাবি করেন যে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিজেপি দুর্নীতি ইস্যুতে জনগণকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলেও তা তেমন প্রভাব ফেলেনি।
৫. দলত্যাগীদের ব্যর্থতা
বিজেপি ভোট প্রচারের সময় বিরোধী দলের নেতাদের নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করে। তবে দলত্যাগীরা বিজেপির জন্য তেমন লাভের সুযোগ করে দিতে পারেনি। এর মধ্যে সীতা সোরেনের মতো প্রার্থীও ভোটে পিছিয়ে পড়েছেন।
এমনই সব কারণে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় আর শাসক জোট আরও শক্তিশালী উঠল বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন: ওয়েনাড়ে প্রিয়ঙ্কার নজিরবিহীন সাফল্য, মহারাষ্ট্র-ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের বেহাল অবস্থা