শীতকালে অনেকেই মদ্যপান করতে পছন্দ করে। অনেকেই মনে করেন এক চুমুক অ্যালকোহল বা মদেই উষ্ণ থাকবে শরীর। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। কারণ, পানীয় জলেই আছে অদ্ভুত জাদু। শীতে শরীর উষ্ণ আর আর্দ্র রাখতে অনেক বেশি কার্যকর হল জল।
অনেকেরই ধারণা, গরমকালে ঘাম ঝরে যায় বলে বেশি করে জল খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। শীতে হয়ত ঘাম হয় না কিন্তু বাতাস শুষ্ক হয়ে যায় বলে শরীরের আর্দ্রতা কমে যায়। শীতকালে ডিহাইড্রেশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায় গরমকালের তুলনায়। তাই শীতে নিয়মিত জল খেলে ত্বক আর্দ্র থাকে।
শীতে আমাদের জলের তেষ্টা পায় না বলে আমরা ডিহাইড্রেশন বা জল শূন্যতা অনুভব করতে পারি না। খাবার ভালো ভাবে হজম করার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল খান। নিয়মিত জল খেলে পেট ভরা থাকে। ওজন বাড়া বা কমা আটকায়। শরীরকে ঠিকমতো পরিচালনার জন্য নিয়মিত ও দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী জল খেতে হবে।
যাঁরা মদ খান তাঁরা মনে করেন শীতের রাতে এক পেগ খেয়ে ঘুমোনো যায়। শীতের ঝক্কি কেটে ভালো ঘুম হয়। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। কারণ, বিভিন্ন রকমের অ্যালকোহল আসলে শরীরের মূল তাপমাত্রাকে কমিয়ে দেয়। তাই মদ্যপানে সাময়িক উষ্ণ অনুভূতি হতে পারে। প্রথমে গরম লাগলেও পরে ধীরে ধীরে তা মিলিয়ে যায়।
শীতে ঠান্ডা লাগলে কাঁপুনি দেওয়া খুব স্বাভাবিক। আসলে কাঁপুনি শরীরের তাপমাত্রা বাড়ানোর একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু মদ শরীরের স্বাভাবিক কাঁপুনি দেওয়ার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
শীতে বাতাস শুষ্ক থাকার কারণে আমাদের শরীরের বেশি আর্দ্রতার বা তরল পদার্থের প্রয়োজন হয়। জলের পাশাপাশি, গরম চা বা কফি, স্যুপ এ ক্ষেত্রে সমান ভাবে সাহায্য করতে পারে। শরীরে আর্দ্রতা কমে গেলে ডিহাইড্রেশন হাইপোথার্মিয়া হতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে কমে যায়। এমন অবস্থায় শরীর তাপ উৎপাদন করার বদলে তাপ হারাতে শুরু করে। ডিহাইড্রেশন হাইপোথার্মিয়ায় শরীরে জলের জোগান কমে গেলে রক্তের পরিমাণের ওপর প্রভাব পড়ে। কমে যায় রক্ত চলাচল। এ ক্ষেত্রে মদ নয় জলের জোগান চাই। কারণ জলই দিতে পারে একমাত্র উপশম।