ভারতের শেয়ার বাজারে টানা পাঁচ দিনের পতনের জেরে বিনিয়োগকারীদের ১৮.৪৩ লক্ষ কোটি সম্পদ হ্রাস পেয়েছে। বিএসই (BSE) সেনসেক্স গত পাঁচ দিনে (সোমবার থেকে শুক্রবার) ৪,০৯১ পয়েন্ট বা ৪.৯৮ শতাংশ কমেছে। শুক্রবার সেনসেক্স ১,১৭৬.৪৬ পয়েন্ট বা ১.৪৯ শতাংশ পড়ে ৭৮,০৪১.৫৯ পয়েন্টে বন্ধ হয়।
বিএসই সেনসেক্স ইন্ট্রাডে ট্রেডিংয়ে ৭৭,৮৭৪.৫৯ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে আসে। এনএসই (NSE) নিফটি ৩৬৪.২০ পয়েন্ট বা ১.৫২ শতাংশ পড়ে ২৩,৫৮৭.৫০ পয়েন্টে স্থির হয়। বিএসই-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির মোট বাজারমূল্য ১৮.৪৩ লক্ষ কোটি টাকা কমে ৪৪০.৯৯ লক্ষ কোটিতে (৫.১৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার) ঠেকেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ডলারের তুলনায় রুপির মান কমে যাওয়া এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর ধীরগতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ শেয়ার বাজারে এই চলমান মন্দার প্রধান কারণ। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় বাজার থেকে শেয়ার বিক্রি করে নিরাপদ ডলারের দিকে ঝুঁকছেন।
এই শেষ কয়েক দিনে রিয়েলটি সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর সূচক ৪.০৭ শতাংশ পড়েছে। এ ছাড়া পাওয়ার, ক্যাপিটাল গুডস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং আইটি সেক্টরও যথাক্রমে ৩.৫৫ শতাংশ, ৩.০২ শতাংশ, ২.৬৭ শতাংশ এবং ২.৫১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সেনসেক্সে সবচেয়ে বেশি লোকসানের মুখে পড়া স্টকগুলির মধ্যে রয়েছে টেক মাহিন্দ্রা, মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, টাটা মোটরস এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। তবে নেসলে এবং টাইটান সামান্য লাভ করেছে।
এশিয়া, ইউরোপ, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারগুলিও মন্দার কবলে। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ০.৯৬ শতাংশ কমে ব্যারেল প্রতি ৭২.১৮ ডলারে নেমেছে, যা বিনিয়োগকারীদের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে উচ্চ মূল্যায়ন এবং কম আয়ের বৃদ্ধির কারণে সংশোধনের পর্যায় চলতে থাকবে। বিশেষ করে মিড এবং স্মল-ক্যাপ শেয়ারগুলিতে আরও পতনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সবমিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের এখন বাজারের ওঠানামার ওপর নজর রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।