নতুন আয়কর বিল ২০২৫ অনুযায়ী, আয়কর দফতরের অনুসন্ধান অভিযানের পর কেউ যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন (আইটিআর) দাখিল না করেন, তাহলে উচ্চপদস্থ কর আধিকারিকদের অনুমতি ছাড়া তাঁকে ধারা ৪৮০-র আওতায় অভিযুক্ত করা যাবে না। এর আগে, ১৯৬১ সালের আয়কর আইনে এই ধরনের অনুমতির প্রয়োজন ছিল না।
নতুন বিলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ধারা ৪৮০ (যা আগের আয়কর আইনের ২৭৬সিসিসি ধারার সমতুল্য) অপরাধ হিসেবে আমল-অযোগ্য (non-cognizable) বলে গণ্য হবে। ১৯৬১ সালের আয়কর আইনে এটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। সাধারণত, কোনো অপরাধ আমল-যোগ্য (cognizable) হলে কর্তৃপক্ষ আদালতের অনুমতি ছাড়াই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু নন-কগনিজেবল হলে আদালতের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার করা যাবে না।
এই পরিবর্তনের ফলে করদাতাদের কী সুবিধা হবে?
নতুন আইনের ফলে কর আধিকারিকদের ইচ্ছেমতো গ্রেফতার করার ক্ষমতা আর থাকছে না। আগে, আয়কর অনুসন্ধান অভিযানের পর আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলেই করদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হতো এবং গ্রেফতার করা যেত। এখন আদালতের অনুমতি ছাড়া এমন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না, যা করদাতাদের জন্য স্বস্তির বিষয়।
ধারা ২৭৬সিসিসি বা নতুন কর বিলের ধারা ৪৮০ কবে প্রযোজ্য হবে?
নতুন কর বিল ২০২৫-এ ধারা ৪৮০ সম্পর্কে জানতে হলে আয়কর বিভাগের অনুসন্ধান ও বাজেয়াপ্ত (search and seizure) প্রক্রিয়া সম্পর্কে বোঝা জরুরি।
যদি আয়কর দফতর মনে করে যে, কোনো ব্যক্তির আয়ের একটি অংশ হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে, তাহলে তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাড়ি বা অফিসে অনুসন্ধান চালাতে পারে। এই অনুসন্ধানের পরে ১৫৮বিসি ধারায় করদাতাকে একটি নোটিস পাঠানো হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইটিআর দাখিল করতে বলা হয়।
যদি করদাতা এই নোটিস পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল না করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ধারা ২৭৬সিসিসি (নতুন কর বিলে ধারা ৪৮০) অনুযায়ী মামলা করা হতে পারে।
কর বিশেষজ্ঞদের মতে, “করদাতাকে বাধ্যতামূলকভাবে এই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে, সে অঘোষিত আয়ের বিষয়টি মেনে নিক বা না নিক। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে তিনি এই রিটার্ন দাখিল না করেন, তাহলে ধারা ৪৮০ কার্যকর হবে।”