গাজার দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্র নাসের হাসপাতালে রবিবার রাতে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। বোমাবর্ষণের ফলে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগে আগুন ধরে যায়। এতে বহু রোগী নতুন করে আহত হয়েছেন, এবং একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) দাবি করেছে, তাদের হামলায় হামাসের এক শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন, যিনি সেখান থেকেই ইজ়রায়েলবিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনা করছিলেন।
হাসপাতালে হামলা কেন?
আইডিএফের দাবি, যে হামাস নেতা নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তিনি সেখান থেকেই গোপন পরিকল্পনা করছিলেন। তাঁকে সরাতে এই হামলা চালানো হয়। ইজরায়েলি বাহিনী বলছে, “আমরা যতটা সম্ভব নিশ্চিত করেছি যে, আশপাশের সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয়। কিন্তু হামাস যেভাবে হাসপাতালকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, সেটাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।”
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, এই হামলার ফলে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এপি জানায়, অস্ত্রোপচার বিভাগের উপর বোমা পড়ার পর দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে নতুন করে বহু মানুষ আহত হন।
নিহত নেতা কে?
আইডিএফ নিহত নেতার নাম প্রকাশ করেনি। তবে বিবিসি-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, নিহত ব্যক্তি হলেন হামাস নেতা ইসমাইল বারহুম, যিনি সংগঠনের রাজনৈতিক ব্যুরোর অন্যতম সদস্য ছিলেন এবং অর্থনৈতিক দিকও পরিচালনা করতেন। কিছুদিন আগে ইজরায়েলেরর আকাশ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি, এরপর নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
যুদ্ধে ৫০ হাজারের বেশি প্যালেস্টিনীয়র মৃত্যু
২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইজ়রায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি প্যালেস্টিনীয় নিহত হয়েছেন। জানুয়ারি থেকে সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও, সম্প্রতি ইজরায়েলি বাহিনী নতুন করে হামলা শুরু করেছে।
নেতানিয়াহুর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা
ইজরায়েলেরর প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, “হামাসের সম্পূর্ণ বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত এবং সকল পণবন্দি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।” তিনি আরও বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই ইজ়রায়েল নতুন করে হামলা শুরু করেছে।
গাজায় অব্যাহত যুদ্ধের ফলে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও, সংঘর্ষ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।