দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনে পাওয়া বিশাল পরিমাণে নগদ অর্থের বিষয়টি আইনি বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে। গত ১৪ মার্চ তাঁর বাড়িতে আগুন লাগার পর পুড়ে যাওয়া টাকার বান্ডিল উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না তিন সদস্যের বিচারপতি কমিটি গঠন করেছেন, যাঁরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করবেন।
বাড়িতে কত টাকা রাখা আইনসম্মত?
ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে বাড়িতে কত টাকা রাখা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট আইনি সীমা নেই। যদি টাকা বৈধ উপায়ে অর্জিত হয় এবং আয়কর নথিতে ঘোষিত থাকে, তা হলে কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। তবে যদি বৈধ উৎস দেখানো না যায়, তাহলে সেই টাকা শুধুমাত্র বাজেয়াপ্তই হবে না, বরং ১৩৭ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে।
নগদ লেনদেনে বর্তমান নিয়ন্ত্রণ
নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে-
- ব্যাংকে ৫০,০০০ টাকার বেশি জমা বা উত্তোলন করলে প্যান কার্ডের তথ্য দিতে হবে।
- এক বছরে ২০ লাখ বা তার বেশি নগদ জমা দিলে প্যান এবং আধার, দুটোই করতে হবে।
- ৩০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের সম্পত্তি কেনাবেচা নগদে করলে তদন্তের মুখে পড়তে হতে পারে।
- ক্রেডিট কার্ড থেকে একক লেনদেনে ১ লাখ টাকার বেশি খরচ করলেও আয়কর দফতরের নজরে আসার সম্ভাবনা থাকে।
অঘোষিত নগদ অর্থের কর সংক্রান্ত প্রভাব
আয়কর আইন নগদ টাকার কোনো ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করেনি, তবে বড় অঙ্কের নগদ অর্থের উৎস বৈধভাবে দেখাতে হবে। আইনের ধারা ৬৮ থেকে ৬৯বি অনুযায়ী, ব্যাখ্যা না দিতে পারলে ৭৮ শতাংশ কর এবং অতিরিক্ত জরিমানা গুনতে হবে।
২ লাখ টাকার বেশি নগদ উপহার বা লেনদেন নিষিদ্ধ
কর বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো ব্যক্তিদেরও নিজের নগদ অর্থের উৎস যথাযথ ভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। নগদ ২ লাখ টাকার বেশি উপহার গ্রহণ বা সম্পত্তি লেনদেন আইনত নিষিদ্ধ। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে সমপরিমাণ জরিমানা ধার্য হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে নগদ উদ্ধারকাণ্ডে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনার পর দেশ জুড়ে নগদ অর্থ গচ্ছিত রাখা ও লেনদেনের আইনি সীমা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।