কলকাতার পার্পল লাইন মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণকাজে বড় অগ্রগতি ঘটেছে। ময়দানের ৬৯১টি গাছ প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটি (সিইসি)। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই অনুমতি পাওয়ায় জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো লাইনের (১৪.৪ কিমি) নির্মাণকাজ পূর্ণগতিতে শুরু হতে চলেছে।
গাছ প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা
রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) প্রাথমিকভাবে ময়দানের প্রায় ৮০০টি গাছ প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা করেছিল। তবে সেনাবাহিনীর সাথে সমীক্ষার পর ও সিইসি-র নির্দেশে এই সংখ্যা কমিয়ে ৬৯১টি করা হয়। আরভিএনএল জানিয়েছে, কাজের জায়গার (working area) গাছগুলিকে যতটা সম্ভব সংরক্ষণ করা হবে।
কোথায় প্রতিস্থাপন হবে গাছ?
প্রথম ধাপে প্রায় ৪৫০টি গাছ এবং দ্বিতীয় ধাপে বাকি গাছগুলিকে প্রতিস্থাপন করা হবে। প্রতিস্থাপনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে বেলেঘাটার কাছে কামারডাঙ্গা। আরভিএনএল সূত্রে জানা গেছে, ময়দান এলাকায় গাছ পুনরোপণের অনুমতি মেলেনি, তাই অন্যত্র এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আইনি লড়াই ও সিইসি-র সিদ্ধান্ত
ময়দানের গাছ বাঁচানোর দাবিতে জনস্বার্থ মামলা করে এনজিও ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা (PUBLIC)’। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিইসি এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। ময়দানকে কলকাতার ‘ফুসফুস’ বলে বিবেচনা করা হয়, তাই পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হয়েছে।
মেট্রো নির্মাণে বাধা কেটেছে
গাছ প্রতিস্থাপনের অনুমতি না থাকায় প্রায় এক বছর ধরে পার্পল লাইন মেট্রো প্রকল্পের কাজ থমকে ছিল। বিশেষ করে পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের ডায়াফ্রাম দেওয়াল নির্মাণ, ম্যানোহর দাস তরাগের ক্রসওভার এবং বিএসি রায় মার্কেটের অস্থায়ী স্টল নির্মাণ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় উদ্যোগ
আরভিএনএল ইতিমধ্যেই ১০০টিরও বেশি গাছ প্রতিস্থাপন করেছে এবং প্রায় ২৫০০টি গাছ নতুন করে লাগানোর পরিকল্পনা করেছে। এর মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখার চেষ্টা চলছে।
মেট্রো প্রকল্পে নতুন গতি
পার্পল লাইনের জোকা-মাঝেরহাট ৭.৭ কিমি অংশ ইতিমধ্যেই উড়ালপথে চালু হয়েছে। ৫ কিমি দীর্ঘ কিদ্দারপুর-এসপ্ল্যানেড অংশটি থাকবে ভূগর্ভে। সিইসি-র অনুমতি পাওয়ার পর এই ভূগর্ভস্থ অংশের নির্মাণকাজে নতুন করে গতি আসবে।
উল্লেখযোগ্য বিষয়
পরিবেশ রক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ প্রতিস্থাপনের এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে পরিবেশবিদদের মতে, প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি নতুন গাছ লাগানোর প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রশাসনকে নজর রাখতে হবে।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

