প্লাস টু-র ফলপ্রকাশের পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও রাজ্যের কেন্দ্রীয় স্নাতক ভর্তি পোর্টাল এখনো চালু হয়নি। ফলে সরকারি ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজগুলির স্নাতক স্তরের ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও শুরু করা যায়নি। এদিকে অধিকাংশ বেসরকারি, স্বশাসিত ও সংখ্যালঘু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন অথবা প্রায় শেষ করে ফেলেছে।
ভর্তির সময়সীমা ইতিমধ্যেই শেষ:
- সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ: ৩১ মে ভর্তি বন্ধ
- সেন্ট জেভিয়ার্স ইউনিভার্সিটি: ২৮ মে ভর্তি বন্ধ
- স্কটিশ চার্চ কলেজ: ৭ জুন ভর্তি বন্ধ হচ্ছে
- রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেনশিয়াল কলেজ, নরেন্দ্রপুর: ৮ জুন ভর্তি বন্ধ হবে
এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পোর্টালের বিলম্বে ছাত্রছাত্রী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আইনি জট:
মে মাসে কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্য সরকারের ওবিসি তালিকার একটি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে দেয়। রাজ্য সরকার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। এই আইনি টানাপোড়েনের মধ্যেই নতুন সংরক্ষণ কাঠামো চূড়ান্ত করেছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। ফলে ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য:
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, “গত বছর ১৯ জুন ভর্তি পোর্টাল খোলা হয়েছিল। এ বছর আরও আগে খোলা হবে। দেরি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।” যদিও ২৩ মে মন্ত্রী বলেছিলেন, মে মাসের মধ্যেই পোর্টাল চালু হবে।
কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্বেগ:
লেডি ব্রাবোর্ন কলেজের প্রিন্সিপাল সিউলি সরকার জানিয়েছেন, “পুরনো ওবিসি সংরক্ষণ মেনে ভর্তি শুরু করব, না কি অপেক্ষা করব—তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরকার দ্রুত নির্দেশ দিলে ভালো হয়।”
অশুতোষ কলেজের প্রিন্সিপাল এবং অল বেঙ্গল প্রিন্সিপালস কাউন্সিলের সম্পাদক মানস কবি বলেন, “পোর্টাল চালু না হওয়ায় আমরা অপেক্ষায় রয়েছি। যত দেরি হবে, তত বেশি সংখ্যক মেধাবী পড়ুয়া বেসরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে যাবে।”
ভর্তি প্রক্রিয়া থমকে যাদবপুর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও:
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্বভাবে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চাইলেও রাজ্য সরকারের নির্দেশে তা স্থগিত রেখেছে। ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট দিশা না থাকায় ভর্তি পরীক্ষা নির্ভর এই বিশ্ববিদ্যালয়ও আটকে রয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিক ও নিউট্রিশন-এর মতো ইন-হাউস কোর্সেও ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
ছাত্র-অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা:
সরকারি কলেজে ভরসা করে থাকা হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর কাছে এখন এক অনিশ্চয়তার সময়। অনেকে আবেদনই করতে পারেননি, আবার অনেকে এখনও অপেক্ষায়।
যদি অচিরেই কেন্দ্রীয় পোর্টাল চালু না হয়, তবে গত বছরের মতো এ বছরও লক্ষ লক্ষ স্নাতক স্তরের আসন ফাঁকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির আস্থাও প্রশ্নের মুখে পড়ছে।