ইংল্যান্ড: ৩৮৭ (জো রুট ১০৪, ব্রাইডন কার্স ৫৬, জেমি স্মিথ ৫১, জসপ্রীত বুমরাহ ৫-৭৪, নীতীশ কুমার রেড্ডী ২-৬২, মহম্মদ সিরাজ ২-৮৫)
ভারত: ১৪৫-৩ (কেএল রাহুল ৫৩ নট আউট, করুণ নায়ার ৪০, বেন স্টোকস ১-১৬, জোফ্রা আর্চার ১-২২)
লর্ডস (লন্ডন): ‘বাজবল’ (দ্রুতগতিতে খেলার ধরনকে ইংল্যান্ডে তাদের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের নামে ডাকা হয়) ছেড়ে ধ্রুপদী ক্রিকেটে আশ্রয় করে ৪ উইকেটে ২৫১ রানে ইংল্যান্ড যখন প্রথম দিনের খেলা শেষ করে, তখন মনে হয়েছিল বড়ো রানের ইনিংস গড়বে ইংল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় দিন ইংল্যান্ডের সেই লক্ষ্যে বাধ সাধলেন জসপ্রীত বুমরাহ। দ্বিতীয় টেস্টে বিশ্রাম নিয়ে তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনে সে ভাবে দাগ কাটতে না পারলেও দ্বিতীয় দিনে নায়ক হয়ে উঠলেন বুমরাহ। তাঁর বলের দাপটে গতকালের স্কোরের সঙ্গে মাত্র ১৩৬ রান যোগ করে গুটিয়ে গেল বেন স্টোকসের দল।
শুক্রবার ইংল্যান্ডের যে ৬ উইকেট পড়ল তার মধ্যে ৫টি দখল করলেন বুমরাহ। বদলে দিলেন ৭৪ রান। বাকি উইকেটটা নিলেন মহম্মদ সিরাজ। ভারত ব্যাট করতে নেমে দিনের খেলা শেষ করে ৩ উইকেটে ১৪৫ করে। অর্ধশত রান পূর্ণ করে ৫৩ রানে ব্যাট করছেন কেএল রাহুল। সঙ্গে রয়েছেন ঋষভ পন্থ। ব্যাট করছেন ১৯ রানে।
পর পর দুটি বলে রুট ও ওকসকে ফেরালেন বুমরাহ
দ্বিতীয় দিনের খেলা তিন ওভার গড়াতেই ধাক্কা খেল ইংল্যান্ড। দিনের তৃতীয় ওভার, বুমরাহর দ্বিতীয় ওভার। বল বুঝতেই পারলেন না বেন স্টোকস। অফস্ট্যাম্প উড়ে গেল তাঁর। গত দিনের রানের সঙ্গে ৫ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ৪৪ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। এর আগেই জো রুট তাঁর শতরান পূর্ণ করেন। দিনের প্রথম বলেই বুমরাহকে চার মেরে ১০৩ রানে পৌঁছে যান রুট।

বুমরাহের দুই শিকার – জো রুট এবং বেন স্টোকস। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
আবার উইকেট পতন। আবার বোল্ড। আবার বুমরাহ। তবে এবার অফ স্টাম্প নয়, মিডল স্টাম্প। বুমরাহর অফ স্টাম্পের বাইরের বল জো রুটের ব্যাটের কানায় লেগে ফেলে দিল মিডল স্টাম্প। বুমরাহর বিধ্বংসী ঝড় কিন্তু থামল না। পরের বলেই আবার আঘাত। এ বার ব্যাটে খোঁচা দিলেন ক্রিস ওকস। বল চলে গেল পরিবর্ত উইকেটকিপার ধ্রুব জুরেলের হাতে। নিজের খাতা খোলার আগেই ফিরে গেলেন ওকস। বুমরাহকে হ্যাটট্রিক পাওয়া থেকে আটকালেন ব্রাইডন কার্স। ও প্রান্তে তখন গত টেস্টে সেঞ্চুরি করা জেমি স্মিথ।
অর্ধশত রান স্মিথ ও কার্সের
এর পর দলের হাল ধরেন জেমি স্মিথ আর ব্রাইডন কার্স। তাঁরা খেলার ধরন কিছুটা পাল্টে দ্রুত গতিতে দলের রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। একসময়ে স্মিথ তাঁর অর্ধশত রান পেরিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ৩৫৩ রান হাতে নিয়ে ইংল্যান্ড মধ্যাহ্নভোজে যায়।
মধ্যাহ্নভোজের পরে খেলতে নেমেই জেমি স্মিথকে হারায় ইংল্যান্ড। ব্যক্তিগত ৫১ রানের মাথায় পরিবর্ত উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান স্মিথ। তিনি মহম্মদ সিরাজের শিকার হন।
এর পর আর বেশি দূর এগোতে পারেনি স্টোকসের দল। ৩৮৭ রানে অল আউট হয়ে যায়। তবে এরই মধ্যে ব্রাইডন কার্স তাঁর অর্ধশত রান পূর্ণ করেন। দলের ৩৭০ রানের মাথায় ব্রাইডন কার্সকে (৫৬ রান) বোল্ড করেন মহম্মদ সিরাজ। আর ১৭ রান যোগ হতেই বুমরাহ বোল্ড করেন জোফ্রা আর্চারকে (৪ রান)।

কে এল রাহুলের অর্ধশত রান। জড়িয়ে ধরলেন ঋষভ পন্থ। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
৫০ পূর্ণ করলেন কে এল রাহুল
প্রথম ইনিংসের খেলা শুরু করে গোড়াতেই ধাক্কা খায় ভারত। সবে মাত্র ৮টি বল খেলেছে ওপেনিং জুটি। এসেছে ১৩ রান। সবটাই যশস্বী জয়সওয়ালের ব্যাট থেকে। কেএল রাহুল শান্ত, ধীরস্থির। তখনও খাতা খোলেননি। ভারতের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বিদায় নিলেন যশস্বী, জোফ্রা আর্চারের বলে হ্যারি ব্রুককে ক্যাচ দিয়ে। চার বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম ধাক্কাটাই দিলেন আর্চার। রাহুলের সঙ্গী হলেন করুণ নায়ার।
করুণও রাহুলের তুলনায় দ্রুত গতিতে রান তুলছিলেন। শেষ পর্যন্ত তারই খেসারত দিলেন দলের ৭৪ রানে। বেন স্টোকসের বলে রুটকে ক্যাচ দিয়ে তিনি যখন ফিরে গেলেন তখন তাঁর ঝুলিতে ৪০ রান। রাহুলের সঙ্গী হলেন অধিনায়ক শুভমন গিল। এ বারের টেস্ট সিরিজে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অধিনায়ক কিন্তু বিশেষ কিছু করতে পারলেন না। ক্রিস ওকসের বলে জেমি স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে গিল যখন ফিরে গেলেন তখন দলের রান ১০৭, তাঁর নিজের ১৬। এর পর রাহুলের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন ঋষভ। এ দিকে রাহুল ধীরে ধীরে খেলে তাঁর ৫০ রান পূর্ণ করলেন। আপাতত ক্রিজে রয়েছেন রাহুল (৫৩ রান) ও ঋষভ (১৯ রান)।
আরও পড়ুন