সোমবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠকেও মেলেনি রফাসূত্র। যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের দাবি এখনও অবিচল—রাতের মধ্যেই প্রকাশ করতে হবে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা। বৈঠক ভেঙে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সামনে আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দিলেন—তালিকা প্রকাশ না হলে চলবে বৃহত্তর আন্দোলন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন
যোগ্য চাকরিহারাদের একাংশ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবি জানাতে চেয়েছিলেন। সেই উদ্দেশ্যেই ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-র ব্যানারে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়।
হাওড়া স্টেশন থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল মিছিল, কিন্তু মাঝপথেই পুলিশের বাধা।
তারপরেই ২০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, সঙ্গে ছিলেন কমিশনার ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তবে বৈঠক শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই মুখ্যসচিব বেরিয়ে যান, ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিহারারা।
আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন:
“তালিকা তৈরি থাকলেও কেন দেওয়া হচ্ছে না?”
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী দু’জনেই স্বীকার করেছেন যে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা তৈরি রয়েছে।
কিন্তু শুধু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নেই—এই যুক্তি দেখিয়ে সেই তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য:
“তালিকা প্রকাশে সুপ্রিম কোর্ট নিষেধ করেনি। তাহলে কেন চাপা রাখা হচ্ছে? আজ রাতের মধ্যেই প্রকাশ না করলে চলবে বৃহত্তর আন্দোলন।”
চাকরিহারাদের ৭ দফা দাবি:
- রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে স্বপদে, সবেতনে পুনর্বহাল
- রিভিউ পিটিশনের খসড়া প্রধান বিচারপতির কাছে পৌঁছনো
- যোগ্য শিক্ষকদের নির্ভুল তালিকা সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ
- ২২ লক্ষ OMR স্ক্রিপ্ট রিপ্যানেল বা পৃথকীকরণ করে প্রকাশ
- সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সরাসরি সাক্ষাৎ
- বৈধ নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের স্বীকারোক্তি হলফনামা আকারে
- পরীক্ষা ছাড়াই সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে চাকরি রক্ষা
কড়া নিরাপত্তা, ব্যারিকেড-ড্রোনে নজরদারি
চলতি আন্দোলন ঘিরে হাওড়া কোর্ট চত্বর ও হাওড়া ময়দান মেট্রো চত্বরে ছিল অভূতপূর্ব নিরাপত্তা।
- মোতায়েন হয় র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স, হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ অফিসাররা
- রাস্তায় ১০-১৩ ফুট উঁচু ব্যারিকেড ও কংক্রিটের পিলার গার্ডরেল
- ড্রোন দিয়ে নজরদারি চলে বিক্ষোভকারী ও পথ চলতি মানুষদের উপর
- আনা হয় জলকামান, তৈরি রাখা হয় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যবস্থা
আন্দোলন চলবে, হুঁশিয়ারি ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের
আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, “তালিকা তৈরি থাকা সত্ত্বেও তা চাপা রাখা মানে দুর্নীতিকে আড়াল করা।
আমাদের দাবি মানা না হলে রাতের মধ্যেই মঞ্চে বসে অনশন ও ধর্নার পথে যাব।”