ওড়িশায় আটক বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিতর্কে বুধবার নতুন মোড়। কলকাতা হাই কোর্টে ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়নি। তাঁদের শুধু ভারতীয় নাগরিক কি না, তা যাচাই করার জন্য আটক করা হয়েছিল।
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে ওড়িশার অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) পীতাম্বর আচার্য বলেন, “আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বৈদেশিক আইন অনুযায়ী তথ্য যাচাই করা হয়েছে মাত্র।” তবে মৌখিক বক্তব্য নয়, লিখিতভাবে এই দাবি আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আগামী ২৮ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে ওড়িশা সরকারকে।
কী বলেছে ওড়িশা?
এজি পীতাম্বর আচার্য আরও বলেন, “বাঙালিরা আমাদের প্রতিবেশী, বন্ধু, ভাই। আমরা কোনওভাবেই বাঙালি বিদ্বেষী নই। ওড়িশায় বহু বাঙালি বাস করেন। এমনকি ওড়িশা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিও বাংলার মানুষ।”
মামলার পটভূমি
সম্প্রতি ওড়িশায় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করা হয়। তাঁদের অনেকেই মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার বাসিন্দা। শ্রমিকদের সঙ্গে পরিবার যোগাযোগ করতে না পারায় উদ্বেগ ছড়ায়। পরে জানা যায়, ওড়িশার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে তাঁদের নাগরিকত্ব যাচাই করা হচ্ছে।
এ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ চিঠি লেখেন ওড়িশার মুখ্যসচিবকে। একইসঙ্গে, আটক শ্রমিকদের পরিবারের তরফে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়।
আদালতের প্রশ্ন
গত শুনানিতে হাই কোর্ট জানতে চায়,
- কেন তাঁদের আটক করা হয়েছে?
- কোনও এফআইআর দায়ের হয়েছে কি?
- এখন কোথায় রয়েছেন ওই শ্রমিকেরা?
- আটক করার পর কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
এই প্রশ্নগুলির লিখিত উত্তর চেয়ে ওড়িশা সরকারের কাছে হলফনামা চেয়েছে আদালত।
ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের গ্রেফতারের অভিযোগ অস্বীকার করলেও, হাই কোর্ট বিষয়টি লিখিতভাবে নিশ্চিত করতে বলায় মামলার পরবর্তী পর্ব আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার সংক্রান্ত এই মামলায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের আন্তঃরাজ্য সমন্বয়ের দিকটিও নতুন করে আলোচনায় উঠে আসছে।
আরও পড়ুন: উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন শুরু করতে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন, সংখ্যার খেলায় এগিয়ে এনডিএ