হিমাচল প্রদেশের পরিবেশগত বিপর্যয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল দেশের শীর্ষ আদালত। গত ২৮ জুলাই হিমাচল হাই কোর্টের এক নির্দেশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া পিটিশনের শুনানিতে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মাধবনের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই ভাবে চলতে থাকলে অচিরেই দেশের মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে হিমাচল।
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, হিমাচলের পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, অনিয়ন্ত্রিত পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং পরিবেশ-বিধিকে উপেক্ষা করে পর্যটনের বিস্তার—সব মিলিয়ে রাজ্যের বাস্তুতন্ত্র আজ মারাত্মক সঙ্কটে। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, “শুধু রাজস্ব আয় নয়, পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষা করাও সরকারের দায়িত্ব। যদি এই প্রবণতা বন্ধ না হয়, তা হলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না।”
আদালত স্পষ্টভাবে জানায়, শুধু প্রকৃতিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এই দুর্যোগের জন্য মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কর্মকাণ্ডই দায়ী। উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আগে স্থানীয় মানুষের মতামত, ভূতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নেওয়াই এখন হিমাচলের সর্বনাশ ডেকে আনছে।
বিচারপতিরা আরও বলেন, “হিমালয়ের কোলের এই রাজ্যে গত কয়েক বছরে চার লেনের হাইওয়ে, সুড়ঙ্গ, রোপওয়ে, নতুন বসতিগুলি তৈরি হয়েছে দ্রুত গতিতে—তাও আবার পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে। পর্যটনই হিমাচলের প্রধান অর্থনৈতিক উৎস হলেও, তা এখন অনিয়ন্ত্রিত এবং পরিবেশবিধ্বংসী রূপ নিয়েছে।”
শীর্ষ আদালতের মতে, এখনও সময় আছে। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রকে সমন্বিত পদক্ষেপ করে পরিবেশ রক্ষায় অগ্রাধিকার দিতে হবে। না হলে হিমাচল শুধু মানচিত্রে নয়, বাস্তবেও একদিন অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।