পুজোর আগেই খুলতে চলেছে ফরাক্কার নতুন চার লেনের সেতু। প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি চালু হলে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে বড় রদবদল। যাত্রী ও পরিবহণ শিল্প উভয়ের কাছেই এটি হবে স্বস্তির বার্তা।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল সেতু নির্মাণের কাজ। লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করা। কিন্তু নানা কারণে নির্মাণের গতি বারবার থমকে যায়। অবশেষে চলতি বছরই সেই কাজ শেষ হওয়ার পথে।
নতুন সেতুর বিশেষত্ব
- মোট দৈর্ঘ্য: ৫.৪৬৮ কিমি (নদীর উপর মূল সেতু ২.৫৮ কিমি, বাকি অ্যাপ্রোচ রোড)
- প্রস্থ: ২৫ মিটার (৮২ ফুট)
- পিলার: ৮৪টি
- প্রকল্প ব্যয়: প্রথমে ৫২১ কোটি, বেড়ে ৬২২.০৪ কোটি টাকা
- নির্মাতা সংস্থা: এক চিনা সংস্থা ও বিশাখাপত্তনমের এক সংস্থার যৌথ দায়িত্বে কাজ
কেন প্রয়োজন নতুন সেতু?
বর্তমানে ফরাক্কা ব্যারাজের উপর যে সেতুটি চালু আছে, সেটি কেবল দু’লেনের। অথচ উভয় দিকেই জাতীয় সড়ক-১২ এখন চার লেনের। যানবাহনের চাপও বিপুল—যেখানে আগে দৈনিক গাড়ির সংখ্যা ছিল ৩,০০০, এখন তা বেড়ে ১২,০০০ ছাড়িয়েছে। এর ফলে প্রতিদিনই ভয়াবহ যানজটে নাজেহাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে।
নতুন সেতু চালু হলে শুধু যানজট কমবেই না, বরং ফরাক্কা ব্যারাজের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ভারী যান চলাচলে ব্যারাজের লকগেট ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। নতুন চার লেনের সেতু সেই চাপ অনেকটাই হালকা করবে।
কাজের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
প্রকল্প আধিকারিক ভেঙ্কটেশ স্বামী সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সেতু পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, পুজোর আগেই সেতু চালুর লক্ষ্যে দ্রুত গতিতে চলছে কাজ।
আশার আলো
ফরাক্কার এই নতুন সেতু চালু হলে কলকাতা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ হয়ে উত্তরবঙ্গগামী সড়ক যাত্রীদের ভোগান্তি অনেকটাই কমবে। উৎসবের মরসুমের আগে এটি চালু হলে উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ আরও সহজ এবং দ্রুত হবে, এমনটাই আশা করছেন বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় মানুষ।
পড়তে পারেন: ২২ আগস্ট কলকাতায় একাধিক মেট্রোর নতুন রুটের উদ্বোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী