নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি: ৬ (আশির আখতার, পার্থিব গগৈ, এইচ থয় সিং, জাইরো বুস্তারা, অ্যান্ডি গাইতান, আলাইদিন আজারেই)
ডায়মন্ড হারবার এফসি: ০ (লুকা মাজসেন)
কলকাতা: ডায়মন্ড হারবার এফসি-কে ৬-১ গোলে ধরাশায়ী করে নিজেদের ঘরেই ডুরান্ড কাপ রেখে দিল নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। গত বছরে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে পেনাল্টি শুট-আউটে পরাজিত করে নিজেদের ঘরে কাপ তুলেছিল নর্থইস্ট। এ বারের ফাইনালে কিন্তু প্রত্যাশিত ঝড় উঠল না। খেলা হল একপেশে।
২০২০ সালে জন্ম নেওয়া ডায়মন্ড হারবার এফসি-র উত্থান চমকপ্রদ। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে কলকাতা ফুটবল লিগের প্রথম ডিভিশন থেকে আই লিগে জায়গা করে নেয় তারা। তার পর ডুরান্ড কাপের ফাইনালে। এত কম সময়ের মধ্যে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে ওঠা খুব কম দলের পক্ষেই সম্ভব হয়েছে। তারা সেমিফাইনালে হারাল ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবকে, যারা আবার কোয়ার্টার ফাইনালে মোহনবাগানকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছিল।

নর্থইস্টের কোচ হুয়ান পেদ্রো বেনালি এবং দলের অন্যতম মালিক বলিউড তারকা জন আব্রাহাম।
সেই ডায়মন্ড হারবার এফসি কিন্তু শনিবার সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচে কার্যত আত্মসমর্পণ করল নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে। আসল দিনেই কিবু ভিকুনার ফুটবলাররা কাজের কাজটি করতে পারল না। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো লুকা মাজসেন আর মাইক কোর্তাজার ছাড়া শনিবার আর কোনো বিদেশিকে খেলাতেই পারল না ডায়মন্ড হারবার। যার ফলে নর্থইস্টের কাছে সহজেই মাত হয়ে গেল ভিকুনার দল।
২টি গোল প্রথমার্ধে, ৫টি গোল দ্বিতীয়ার্ধে
এ দিন প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় নর্থইস্ট। প্রথম গোলের জন্য নর্থইস্টকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। তার পর একের পর এক গোল আসে। ম্যাচের ৩০ মিনিটে ডায়মন্ডের বক্সে জটলা থেকে নর্থইস্ট যে শট নেয়, তা বাঁচিয়ে দেন ডায়মন্ডের গোলকিপার মিরশাদ মিচু। কিন্তু ফিরতি বল চলে যায় আশির আখতারের কাছে। তিনি গোল করতে কোনো ভুলচুক করেননি। নর্থইস্টের দ্বিতীয় গোল আসে ১৬ মিনিট পরে, প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে। ডায়মন্ডের বক্সে ঢুকে পার্থিব গগৈ বাঁ পায়ে যে শট নেন, তা মিরশাদকে পরাস্ত করে গোলে ঢুকে যায়।

জয়ের আনন্দে নর্থইস্টের খেলোয়াড়েরা।
নর্থইস্টের বাকি চারটি গোল হয় দ্বিতীয়ার্ধে। একফাঁকে ডায়মন্ড একটি গোল শোধ করে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে তৃতীয় গোল করে নর্থইস্ট। ডান দিক থেকে ডায়মন্ডের রক্ষণভাগে ঢুকে পড়েন আলাইদিন আজারেই। তিনি দূর পোস্টের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা এইচ থয় সিং-কে লক্ষ্য করে যে পাস দেন তা অপচয় হয়নি। থয় সিং ডায়মন্ডের জালে বল জড়িয়ে দেন। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে একটি গোল শোধ করে ডায়মন্ড। কর্নার থেকে বল পেয়ে যান জোবি জাস্টিন। তাঁর থেকে বল পান লুকা মাজসেন। মাজসেন যে শট নেন তা নর্থইস্টের গোলকিপার গুরমিতকে পরাস্ত করে গোলে ঢুকে যায়।
নর্থইস্টের বাকি তিনটি গোল আসে ম্যাচের শেষ দিকে। ৮১ মিনিটে জাইরো বুস্তারার শট ডায়মন্ডের পোস্টে লেগে গোলে ঢুকে যায়। পাঁচ মিনিট পরে আবার গোল। থয়কে দিয়ে যে ভাবে গোল করিয়েছিলেন আজারেই, ঠিক সে ভাবেই এবার তিনি গোল করালেন অ্যান্ডি গাইতানকে দিয়ে। আর অতিরিক্ত সময়ের চার মিনিট গোল করেন এ দিনের জয়ের কার্যত নায়ক আলাইদিন আজারেই। তিনি যে পেনাল্টি শট নেন, তা পরাস্ত করে মিরশাদকে। নর্থইস্ট ৬-১ গোলে পর্যুদস্ত করে ডায়মন্ডকে।
ছবি: সঞ্জয় হাজরা