৮০তম বছরে আলিপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের বিষয় ভাবনা হল ‘চা-পান উতোর’। চা এক আশ্চর্য পানীয়। হত দরিদ্র থেকে ধনী ব্যক্তি– কারোরই চা ছাড়া চলে না। চাকে ঘিরে কত গান, কত আবেগ, কত কত স্মৃতির ইতিহাস। এসবই এবছর আলিপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপে তুলে ধরছেন শিল্পী অনির্বাণ দাস।
থিম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অনির্বাণ জানান, ‘বাংলায় পাহাড়ের রানি দার্জিলিংয়ের একের পর এক চা বাগান গজিয়ে ওঠে। দার্জিলিংয়ের চায়ের স্বাদ স্বর্গীয়। বিশ্ব জুড়ে তার নামডাক। তারও আগে অসম প্রদেশে রবার্ট ব্রুসকে চা চিনিয়েছিলেন মণিরাম দেওয়ান। তিনিই প্রথম ভারতীয় টি-প্ল্যান্টার। বাংলায়-অসমে একের পর এক চা-বাগান গজিয়ে ওঠে। সেই সব চা বাগানে কাজকর্মের সন্ধানে দেশ-গাঁ থেকে পালে পালে উজিয়ে আসে শ্রমিক।
ব্রিটিশ আমলে তাঁদের ওপর চলত অকথ্য অত্যাচার। বিদ্রোহী হলে তাঁদের তাক করে ছুটে আসত ইংরেজদের বুলেট। এই বাংলার উত্তরপ্রান্তে থাকা হিমালয়ের বুক জুড়ে ঢেউ খেলানো চা-বাগান রয়েছে। মা উমাও হিমালয়ের কন্যা। চা-বাগানে কর্মরত মহিলা চা-শ্রমিকের পিঠে চায়ের টুকরি। কোলে সন্তান। আমার চোখে তাঁরা স্বয়ং মা দুর্গাই। কোলে তাঁদের খোকা গণেশ।’
চিনা দার্শনিক লাওজু বলেছিলেন, ‘চা হল পরশমণি’। চায়ের মধ্যেই পঞ্চভূত বিরাজমান। চায়ের মতো অলীক পানীয় কীভাবে আবিষ্কার হল, তা নিয়ে কত উপকথা, কত গল্প, কত কিংবদন্তী। এই চা-কে ঘিরেই কত চায়ের পেয়ালায় তুফান উঠল, ঝগড়া লাগল দেশে-দেশে। পৃথিবীর কত শত পালাবদলের সাক্ষী হল চা।
চা ঘিরে কত গল্প! চায়ের আড্ডায় বিপ্লবের রূপরেখা তৈরি করেন ভ্লাদিমির লেনিন। আবার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার তাঁর বিখ্যাত চা-ঘরেই ফন্দি আঁটেন নানা কুকীর্তির।
দুর্গাপুজো সংক্রান্ত আরও প্রতিবেদন পড়তে এখানে ক্লিক করুন