খবর অনলাইন ডেস্ক: ভারত দ্বিতীয় দিনের খেলার শুরুতে মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে ১২২ রানে পিছিয়ে থেকে মাঠে নামে। কেউই বুঝতে পারেনি, পরের ছয় ঘণ্টা ক্রিকেটে এমন অস্থির নাটকীয়তা অপেক্ষা করছে। এ দিন ভারত ইনিংস শেষ করে ১৮৯ রানে। অর্থাৎ ৩০ রানে এগিয়ে থাকে তারা। দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে। অর্থাৎ তারা এগিয়ে আছে ৬৩ রানে, হাতে মাত্র ৩ উইকেট।
মোট ১৫টি উইকেট পড়েছে দিনে, ম্যাচের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ মাত্র ৩৯—ভারতের কেএল রাহুলের। দু’দলের মধ্যে এমন কঠিন ব্যাটিং পরিস্থিতি শেষ দেখা গিয়েছিল এক দশকেরও বেশি আগে, ২০১০-১১ ডারবান টেস্টে।
প্রথম দিন থেকেই পিচে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যাচ্ছিল। দেখতে স্বাভাবিক হলেও দ্বিতীয় সেশনের পর থেকেই ওপরের স্তর উঠে গিয়ে ব্যাটারদের খেলার পক্ষে তা অত্যন্ত কঠিন পিচ হয়ে ওঠে। দ্বিতীয় দিনে স্পিনারদের পাশাপাশি পেসাররাও মিলিয়ে নিয়েছেন ২৬ উইকেটের মধ্যে ১১টি।

ঘাড়ে টান নিয়ে মাঠ ছাড়লেন শুভমন গিল। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
দিনের নায়ক রবীন্দ্র জাদেজা
দ্বিতীয় দিনে ভারতের ব্যাটিংয়ে ধস নামলেও দিনের নায়ক ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। প্রথমে ব্যাট হাতে ২৭ রানের লড়াকু ইনিংস, পরে বল হাতে ১৩ ওভারে ৩ মেডেনসহ ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান তিনি।
দিনের শুরুতে ভারত কে এল রাহুল ও ওয়াশিংটন সুন্দরের মাধ্যমে আধিপত্য ধরে রাখে। কিন্তু সাইমন হার্মারের লাগাতার টার্নে সুন্দর আউট হওয়ার পর শুরু হয় বিপর্যয়। গিল হঠাৎই ঘাড়ে টান অনুভব করে মাঠ ছাড়েন। রাহুল, জাদেজা আর ঋষভ পন্থ কিছুটা লড়াই করলেও বলের আচরণ এতটাই অনিশ্চিত ছিল যে, যে কোনো সময় বিপদ আসন্নই ছিল। ভারতের শেষ চার উইকেট পড়ে মাত্র ৩৬ রানে।

অক্ষর পটেলের বলে ফিরে গেলেন কাইল ভ্যারেইন। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
আরও বড়ো বিপদে দক্ষিণ আফ্রিকা
দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা আরও বেশি বিপদে পড়ে। বুমরাহ অসমান বাউন্স নিয়ে শুরুতেই চাপ তৈরি করেন। এর পর বোলিংয়ে আসেন কুলদীপ যাদব ও জাদেজা, যাঁরা একের পর এক ব্যাটারকে ভুল করতে বাধ্য করেন। কুলদীপের বল না ঘুরে রায়ান রিকেলটনকে আউট করে সেশন শেষ হয়। পরে জাদেজার ধারাবাহিক চাপেই একে একে সাজঘরে ফেরেন মার্করাম, ডি জর্জি, মুল্ডার ও স্টাবস। অক্ষর পটেলের বলে জোরে খেলতে গিয়ে আউট হন কাইল ভ্যারেইন।
দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা দাঁড়ায় ৯৩/৭ স্কোরে, যেখানে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ৭৮ বল খেলে ২৯ রানে অপরাজিত। এখন ম্যাচে ফিরতে হলে আরও অনেক বড়ো দায়িত্ব পালন তাঁকে করতে হবে।
জাদেজা, কুলদীপ, বুমরাহদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং, ব্যাটারদের বুদ্ধিদীপ্ত ক্যাচিং, আর পিচের অস্বাভাবিক আচরণ—সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দিনটি হয়ে উঠেছে স্মরণীয় ও নাটকীয়। ম্যাচ এখন যে কোনো দিকেই যেতে পারে, কিন্তু ভারতেরই বাড়তি সুবিধা।
আরও পড়ুন
ভারত-দঃ আফ্রিকা ১ম টেস্ট: বুমরাহর বিধ্বংসী বোলিংয়ে ইডেনে প্রথম দিনেই বাভুমাদের বিপর্যয়


