শেষ ১০ দিনে প্রতি ১০ গ্রাম সোনার দাম কমেছে ২,৯০০ টাকা। বর্তমানে সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৭১,০৬৫ টাকা (২৪ এপ্রিল, ২০২৪)। সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ মূল্য ৭৩,৯৫৮ টাকা থেকে অনেকটাই পড়ে গিয়েছে মূল্যবান এই হলুদ ধাতুর দাম। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা কমেছে। যাতে সাময়িক ভাবে চিন্তা হালকা হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। প্রধান এই কারণের জন্যই সোনার দামে পতন ধরা পড়ছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এমসিএক্স জুন গোল্ড ফিউচারের দাম ৩৬ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭১,০৬৫ টাকা প্রতি ১০ গ্রাম। এই একই সময়ে এমসিএক্স মে সিলভার ফিউচার ১৭২ টাকা বা ০.২১ শতাংশ বেড়ে প্রতি এক কেজিতে হয়েছে ৮০,৮৫০ টাকা।
বিশ্লেষকদের মতে, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়েই সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছিল সোনার দাম। গত ১২ এপ্রিল প্রতি ১০ গ্রাম সোনার দাম ঠেকেছিল ৭৩,৯৫৮ টাকায়। কিন্তু এখন পরিস্থিতির বদল হয়েছে। সেসময় ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে সংঘাতের আবহে নিরাপদ সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসাবে সোনা কেনার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। এখন উত্তেজনা হ্রাস পেতেই ফের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের বিকল্প মাধ্যম বেছে নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি ও সিইও শুভঙ্কর সেনের মন্তব্য উদ্ধৃত করে টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, অক্ষয় তৃতীয় এগিয়ে আসছে। অনেকেই সোনা কেনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ইজরায়েল ও হামাস সংঘর্ষ, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও চিনে চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা-সহ আন্তর্জাতিক অনিশ্চয়তা রয়েই গিয়েছে। এই পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তা হলে সোনার দাম বেড়ে যেতে পারে। তিনি মনে করেন, প্রফিট বুকিংয়ের জন্যই দাম কমেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সর্বোচ্চ শিখর ছুঁতেই অনেকেই ভার্চুয়াল সোনা বিক্রি লাভের কড়ি পকেটে ভরে নিচ্ছেন। অন্য দিকে, মধ্য়প্রাচ্যে সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ কমতেই বুধবার সোনার দাম কিছুটা কমেছে। আরও কমতে পারে এমন শঙ্কা থেকেও বিক্রি করার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। ইতিমধ্যে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল অর্থনৈতিক তথ্যের জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ কোন সময় সুদের হার কমাতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলতে পারে ওই রিপোর্টে।
উল্লেখ্য, এমসিএক্স বা মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (MCX) হল ভারত ভিত্তিক একটি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ। এটি ভারতের বৃহত্তম পণ্য ডেরিভেটিভ এক্সচেঞ্জ। সোনা এবং ফিউচার ট্রেডিংয়ের বিকল্প লেনদেনের অফার দেয় এমসিএক্স। এটি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের সোনার চুক্তি কেনাবেচার অনুমতি দেয়। এই চুক্তিগুলি অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক সোনার মালিকানা ছাড়াই সোনার দামের উপর বিনিয়োগ এবং লাভের সুযোগ দেয়।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পেলেন ৬৬ হাজারেরও বেশি ভারতীয়, বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়