ভারতের পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এল আন্তর্জাতিক গবেষণায়। Mercer CFA Institute Global Pension Index 2025-এর রিপোর্টে বিশ্বের ৫২টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান অন্যতম নীচের সারিতে। দেশটি পেয়েছে ‘Grade D’, যা তুরস্ক, আর্জেন্টিনা এবং ফিলিপিন্সের সমতুল্য।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই দেশগুলিতে পেনশন ব্যবস্থার কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও, “বড় ধরনের কাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে, যা অবিলম্বে সংস্কার করা জরুরি।”
গত বছরের তুলনায় ভারতের স্কোরও কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে ভারতের ইনডেক্স ভ্যালু ছিল ৪৪, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩.৮।
রিপোর্টের মূল সূচকসমূহ
রিপোর্টে তিনটি প্রধান মানদণ্ডে দেশগুলিকে মূল্যায়ন করা হয়েছে —
- আর্থিক পর্যাপ্ততা (৪০%)
- স্থিতিশীলতা (৩৫%)
- বিশ্বাসযোগ্যতা বা সততা (২৫%)
ভারতের রেটিং:
- আর্থিক পর্যাপ্ততা: গ্রেড ই
- স্থিতিশীলতা: গ্রেড ডি
- বিশ্বাসযোগ্যতা বা সততা : গ্রেড সি
(সূত্র: The Telegraph)
ভারতের জন্য উদ্বেগের দিকসমূহ
রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “ভারতে পেনশন ব্যবস্থার কাঠামোগত দুর্বলতা মূলত কভারেজ, সম্পদ সঞ্চয় এবং বয়স্ক নাগরিকদের আর্থিক নিরাপত্তার অভাবে।”
এছাড়া পেনশন সম্পদ-জিডিপি অনুপাত নিয়েও তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গবেষকরা।
অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪–২৫ অনুযায়ী, ভারতের মোট পেনশন সম্পদ দেশের জিডিপির মাত্র ২১%, যেখানে OECD দেশগুলিতে গড় অনুপাত ৮০% বা তার বেশি।
রিপোর্টের সুপারিশ
রিপোর্টে ভারতের জন্য কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—
দরিদ্র প্রবীণদের জন্য ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা (Minimum Income Floor) প্রবর্তন।
অসংগঠিত খাতের শ্রমিকদের মধ্যে পেনশন কভারেজ বাড়ানো।
দীর্ঘমেয়াদি পেনশন সম্পদ সঞ্চয় বাড়িয়ে অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা।
বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলি
অন্যদিকে, সিঙ্গাপুর প্রথমবারের মতো ‘Grade A’ পেয়ে বিশ্বের শীর্ষ স্তরে প্রবেশ করেছে।
নেদারল্যান্ডস আগের মতোই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, তার পরেই রয়েছে আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক ও ইজরায়েল।
বিশেষজ্ঞদের মত
অর্থনীতিবিদদের মতে, ভারতের পেনশন ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বেসরকারি ও অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট আর্থিক সুরক্ষা না থাকা। “জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পেনশন সুরক্ষা এখন সামাজিক স্থিতিশীলতার বিষয় হয়ে উঠছে,” — জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: ইপিএফও সদস্যদের জন্য বড় পরিবর্তন: সহজ হল টাকার তোলার নিয়ম