নতুন শ্রমবিধি চালু নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে তীব্র মতবিরোধের আবহে উত্তাল শ্রমক্ষেত্র। মোদী সরকার এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে নতুন শ্রমবিধি কার্যকর করার পরিকল্পনা করেছে। তবে এর বিরোধিতায় সরব হয়েছে সিটু, আইএনটিইউসি, এইচএমএস-সহ ১০টি ট্রেড ইউনিয়ন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে তারা বিধি কার্যকর না করার দাবি জানিয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলি সতর্ক করে দিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধন না হলে ধর্মঘট-সহ বড় আন্দোলনের পথে হাঁটবে তারা।
কেন্দ্র ২০১৯-২০ সালে চারটি শ্রমবিধি সংসদে পাশ করে। মজুরি, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক সুরক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত এই বিধিগুলি পুরনো শ্রম আইনগুলিকে একত্রিত করে গঠন করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, বিধিগুলি শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী এবং মালিকপক্ষকে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করবে।
শ্রমিকদের প্রধান উদ্বেগগুলির মধ্যে রয়েছে:
* কারখানা বন্ধে অনুমোদনের সীমা ১০০ শ্রমিক থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করা।
* নতুন ইউনিয়ন নথিভুক্তিকরণের জটিলতা।
* ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার অধিকার খর্ব হওয়ার আশঙ্কা।
পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য এই বিধিগুলি চালু না করার ঘোষণা করেছে। পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, এই বিধি রাজ্যে কার্যকর হবে না।
সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, “বিধিগুলির একাধিক ধারা শ্রমিক স্বার্থের বিরোধী। এগুলি চালু করা হলে দেশজুড়ে আন্দোলন হবেই।” আইএনটিইউসি-র অশোক সিংহ বলেন, “করোনাকালে কোনও আলোচনা ছাড়াই বিলগুলি পাশ করানো হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলির মতামত নেওয়া হয়নি।”
সব মিলিয়ে, কেন্দ্রীয় শ্রমবিধি নিয়ে সংঘাত ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। কেন্দ্র-রাজ্যের এই টানাপোড়েন শ্রমক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা এখনই বলা কঠিন।