Home শিল্প-বাণিজ্য ব্যক্তিগত ঋণ: সময়মতো ইএমআই মেটাতে ব্যর্থ হলে কী হয়?

ব্যক্তিগত ঋণ: সময়মতো ইএমআই মেটাতে ব্যর্থ হলে কী হয়?

0

বর্তমান দ্রুতগতির জীবনে বাড়ি সংস্কার থেকে চিকিৎসার খরচ মেটাতে ব্যক্তিগত ঋণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সমাধান হয়ে উঠেছে। তবে এই ঋণ সহজে পাওয়া গেলেও, সময়মতো ইএমআই (সমান মাসিক কিস্তি) পরিশোধে ব্যর্থতার গুরুতর পরিণতি রয়েছে। ইএমআই পরিশোধে ব্যর্থতা আপনার আর্থিক স্থিতি এবং ক্রেডিট রেটিংয়ের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার ধরন

বড় ধরনের ব্যর্থতা: ৯০ দিনের বেশি সময় ধরে কিস্তি না দিলে ঋণটি নন-পারফর্মিং অ্যাসেট (এনপিএ) হিসাবে চিহ্নিত হয়। এটি ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ছোট ধরনের ব্যর্থতা: ৯০ দিনের কম সময় ধরে কিস্তি না দিলে ছোট ধরনের ব্যর্থতা হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি ক্রেডিট স্কোরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তবে পুনরুদ্ধার সম্ভব।

ইএমআই পরিশোধে ব্যর্থতার প্রভাব

১. ক্রেডিট স্কোরের ক্ষতি: একটি কিস্তি না দিলে আপনার ক্রেডিট স্কোর ৫০ থেকে ৭০ পয়েন্ট পর্যন্ত কমে যেতে পারে। বেশিরভাগ ঋণদাতা ৭৫০ বা তার বেশি ক্রেডিট স্কোর দাবি করে।

২. ঋণযোগ্যতার ক্ষতি: আপনার ঋণ পরিশোধের ইতিহাস ক্রেডিট রিপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিস্তি মিস করলে ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়া কঠিন হতে পারে।

৩. লেট ফি এবং জরিমানা: বেশিরভাগ ব্যাংক বিলম্বিত পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত ফি ধার্য করে, যা আপনার উপর আর্থিক চাপ বাড়ায়।

৪. ঋণ পুনরুদ্ধারকারী এজেন্ট: ৯০ দিনের বেশি বিলম্বিত হলে ব্যাংক ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করতে পারে। সাধারণত ৬০ দিনের নোটিশ দেওয়া হয় এনপিএ হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার আগে।

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতা এড়ানোর কৌশল

১. আর্থিক পরিকল্পনা করুন: সঠিক বাজেটিং এবং আর্থিক পরিকল্পনা কিস্তি মিস করার ঝুঁকি কমায়।

২. কম ইএমআই-এর আবেদন করুন: কিস্তি পরিশোধে অসুবিধা হলে ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তারা ঋণের মেয়াদ বাড়ানো বা অসুরক্ষিত ঋণকে সুরক্ষিত ঋণে রূপান্তরের মতো বিকল্প দিতে পারে।
৩. আংশিক পরিশোধ করুন: আংশিক পরিশোধ করলে ইএমআই এবং সুদের বোঝা কমানো যায়।

৪. ইএমআই-মুক্ত সময়কাল চাওয়া: অস্থায়ী আয়ের সমস্যা হলে ব্যাংকের কাছে ৩-৬ মাসের ইএমআই-মুক্ত সময় চাওয়া যেতে পারে।

৫. ঋণদাতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন: আর্থিক সমস্যার বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করলে অনেক সময় সমাধান পাওয়া যায়।

৬. পুনর্নিবেশনের কথা ভাবুন: ঋণের পুনর্নিবেশনের মাধ্যমে ইএমআই কমানো যেতে পারে, তবে এর জন্য ভালো ক্রেডিট স্কোর প্রয়োজন।

বলে রাখা ভালো, ইএমআই পরিশোধে ব্যর্থতা ক্রেডিট স্কোর থেকে আইনি সমস্যার মতো গুরুতর ফলাফলের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে ঋণ চুক্তি ভালোভাবে বোঝা এবং সময়মতো পরিশোধ নিশ্চিত করা জরুরি। আর্থিক সমস্যায় পড়লে ঋণদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনর্গঠন বা পরিশোধ পরিকল্পনা পরিবর্তনের বিকল্প খুঁজুন। পাশাপাশি, একজন যোগ্য আর্থিক পরামর্শদাতার সঙ্গে পরামর্শ করলে ব্যক্তিগত পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক দিকনির্দেশ পাওয়া সম্ভব।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version