নয়াদিল্লি: মোটা ধাতুর পাঁচ টাকার মুদ্রা বাতিল করার পথে এগোচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই মুদ্রার চোরাচালান এবং গলিয়ে ব্লেড তৈরির অভিযোগ ক্রমেই বাড়তে থাকায় এমন সিদ্ধান্তের কথা ভাবা হচ্ছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা করা হয়নি।
বর্তমানে বাজারে একাধিক ধরনের পাঁচ টাকার মুদ্রা চালু রয়েছে। এর মধ্যে একটি মোটা ধাতুতে নির্মিত। কিন্তু আরবিআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্তাদের দাবি, “মোটা ধাতুর পাঁচ টাকার মুদ্রাটি গলিয়ে ব্লেড তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে একাধিক ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।”
একজন শীর্ষ কর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “একটি পাঁচ টাকার মুদ্রা গলিয়ে অন্তত পাঁচ-ছ’টি ব্লেড তৈরি করা সম্ভব। প্রতিটি ব্লেডের দাম দু’টাকা হলে, একটি মুদ্রা থেকে ১০-১২ টাকার উপার্জন হচ্ছে। এতে মুদ্রার আসল মূল্য তার আর্থিক মূল্যকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির দিক থেকে এটি সুস্থ লক্ষণ নয়।”
পাঁচ টাকার মুদ্রা চোরাচালানের অভিযোগ আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে এই মুদ্রার চোরাচালান রুখতে সমস্যার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাজার। আরবিআই সূত্রের খবর, মোটা ধাতুর মুদ্রার বদলে পাতলা সংকর ধাতুর মুদ্রা ব্যবহার বেশি নিরাপদ। পাতলা মুদ্রা দিয়ে ব্লেড তৈরি করা সম্ভব নয় বলে এই ধরনের চোরাচালানের প্রবণতাও কম।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বৈঠকে বসবে। সেখানেই মোটা ধাতুর পাঁচ টাকার মুদ্রা পুরোপুরি বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে কেন্দ্রের অনুমোদনও প্রয়োজন হবে।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, পিতল ও অন্যান্য সংকর ধাতুর তৈরি পাঁচ টাকার মুদ্রা এখনই বাতিল করার কোনও পরিকল্পনা নেই।
আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, “মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এমন পদক্ষেপ প্রয়োজন হতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে জনসাধারণকে সচেতন করতে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”