নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার লোকসভায় ‘এক দেশ, এক ভোট’ সম্পর্কিত দু’টি বিল পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল সংসদের নিম্নকক্ষে সংবিধান (১২৯তম সংশোধনী) বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিলটি পেশ করেন। বিলটি পেশ হতেই কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র দলগুলি তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
বিরোধী সাংসদদের মতে, এই বিল সংবিধানের মূল কাঠামোতে আঘাত হানবে এবং একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বিলটি দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। ডিএমকের টিআর বালু প্রশ্ন তোলেন, “দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়া কী ভাবে বিজেপি এই বিল পাস করাবে?” মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি-ও এই বিলের বিরোধিতা করেন।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার অবশ্য বিলটিকে “ঐতিহাসিক” বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ ব্যয় সাশ্রয়ী এবং প্রশাসনিক ভাবে কার্যকর। শরিক দল টিডিপি এবং শিবসেনা (শিন্ডে) বিলটিতে সমর্থন জানিয়েছে। শ্রীকান্ত শিন্ডে বিরোধীদের সমালোচনা করে বলেন, “কংগ্রেস এবং বিরোধী দলগুলি সব কিছুতেই অসাংবিধানিকতার অভিযোগ তুলছে।”
বিরোধীদের আপত্তি আঁচ করে কেন্দ্র আগেই সিদ্ধান্ত নেয় বিল দু’টি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কমিটিতে বিল পাঠানোর প্রস্তাব দেন এবং আইনমন্ত্রী মেঘওয়ালও এতে সম্মতি জানান।
আপাতত, বিল নিয়ে বিরোধী ও শাসকপক্ষের বিরোধের ফলে এটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, ‘এক দেশ, এক ভোট’ ধারণাটি নতুন নয়। ১৯৫০ সালে সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর ১৯৫২, ১৯৫৭, ১৯৬২ এবং ১৯৬৭ সালে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের জন্য একযোগে ভোট হয়েছিল। তবে ১৯৬৮-৬৯ সালের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার পর থেকে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চোরাচালান নিয়ে উদ্বেগ, মোটা ধাতুর পাঁচ টাকার মুদ্রা বন্ধ করবে আরবিআই?