শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) টানা পঞ্চম দিনে বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারতীয় শেয়ারবাজার। সেনসেক্স প্রায় ১২০০ পয়েন্ট পড়ে ৭৮,০৪১.৫৯-এ বন্ধ হয়েছে। নিফটি ৫০ সূচকও ৩৬৪ পয়েন্ট কমে ২৩,৫৮৭.৫০-এ শেষ হয়েছে। মাঝারি এবং ছোট শেয়ারগুলিও বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বিএসই মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ সূচক যথাক্রমে ২.৪৩ শতাংশ এবং ২.১১ শতাংশ কমেছে।
একদিনে বাজারের মোট মূলধন প্রায় ৯ লক্ষ কোটি টাকা কমে ৪৪১ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। গত পাঁচ দিনের ক্রমাগত পতনে মোট ১৮ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা ।
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর গতি ধীর হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। এর পাশাপাশি, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পুঁজি প্রত্যাহার, রুপির রেকর্ড নিম্নমুখী অবস্থা এবং ভারতের আর্থিক অবনতির প্রভাবও বাজারের উপর চাপ তৈরি করেছে।
পতনের অন্যতম পাঁচ কারণ
মার্কিন ফেডের সুদের হার ইঙ্গিত: মার্কিন ফেড সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমালেও ভবিষ্যতে হার কমানোর সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখিয়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী বাজারে অনিশ্চয়তা বেড়েছে।
বিদেশি পুঁজির বহিঃপ্রবাহ: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগত বিনিয়োগকারীরা (FIIs) টানা চার দিনে ১২,০০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন। ডলারের শক্তিশালী হওয়া, বন্ডের উচ্চ ফলন এবং মার্কিন ফেডের সুদের হার কমানোর ধীরগতির সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের বাজার থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।
রুপির রেকর্ড পতন: শুক্রবার ভারতীয় রুপি প্রতি ডলারে ৮৫.৩৪-এর সর্বকালের নিম্নতম পর্যায়ে পৌঁছায়। দুর্বল রুপি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লাভকে কমিয়ে দেয় এবং বাজারে বিনিয়োগ অনুপ্রাণিত করে না।
ম্যাক্রোইকোনমিক চ্যালেঞ্জ: ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি নভেম্বর মাসে রেকর্ড ৩৭.৮৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও ক্রমশ মন্থর হয়ে পড়ছে।
উপার্জনের অনিশ্চয়তা: ভারতের প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের দুর্বল আয়ের পরে, তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আয়ের পুনরুদ্ধারের আশা করা হলেও তা চতুর্থ ত্রৈমাসিক পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বড় সংস্থার শেয়ার কিছু সময়ের মধ্যে পুনরুদ্ধার করতে পারে। তবে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরে বাজারের উন্নতির জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।