Home শিল্প-বাণিজ্য টানা পতন শেয়ার বাজারে, ৫ দিনে সেনসেক্স কমল ১৬০০ পয়েন্ট

টানা পতন শেয়ার বাজারে, ৫ দিনে সেনসেক্স কমল ১৬০০ পয়েন্ট

0

ভারতের শেয়ার বাজারে বড়সড় ধস নেমেছে। টানা পাঁচ দিনে সেনসেক্স ১৬০০ পয়েন্টের বেশি পড়েছে, আর নিফটি ২৩,২৫০ স্তরে নেমে এসেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রমাগত বিনিয়োগ তুলে নেওয়া, দুর্বল ত্রৈমাসিক আয়, মুদ্রাস্ফীতি এবং রুপির পতন—এই সব মিলিয়ে বাজারে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার সেনসেক্স ৭৭,৩৮৪.৯৮ পয়েন্টে খোলার পর ৪০৩ পয়েন্ট পড়ে ৭৬,৯০৮.৮১-তে নামে। নিফটি ২৩,৩৮৩.৫৫ থেকে ১৩১ পয়েন্ট কমে ২৩,২৫০.৯০-এ নামে।

মাঝারি ও ছোট সংস্থাগুলির শেয়ারও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে বিএসই মিডক্যাপ ও স্মলক্যাপ সূচক ২ শতাংশের বেশি পড়েছে। গত পাঁচ দিনে সেনসেক্স ১,৬৭৫ পয়েন্ট ও নিফটি ৪৮৮ পয়েন্ট হারিয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৪ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কেন পড়ছে ভারতীয় শেয়ার বাজার?

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাঁচটি মূল কারণ এই পতনের জন্য দায়ী—

১. বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক বিক্রি

গত অক্টোবর থেকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলি (FPI) ভারতীয় শেয়ার বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নিচ্ছে। ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তারা ১২,৬৪৩ কোটি মূল্যের শেয়ার বিক্রি করেছে এবং অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত বাজার থেকে ২.৭৫ লাখ কোটি টাকা বেরিয়ে গেছে।

২. দুর্বল তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আয়

ভারতীয় সংস্থাগুলির ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের আয় প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল হয়েছে। বিশেষ করে ভোক্তা সামগ্রী, গাড়ি ও নির্মাণ সামগ্রী খাত আশানুরূপ লাভ করতে পারেনি।

৩. রুপির দুর্বলতা

ডলারের বিপরীতে রুপির মান রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধাক্কা দিয়েছে। সোমবার রুপি ৮৮-এর কাছাকাছি পৌঁছেছিল, যদিও মঙ্গলবার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের গুঞ্জনে এটি সামান্য শক্তিশালী হয়ে ৮৬.৮৪-তে পৌঁছায়।

৪. উচ্চ মূল্যায়ন নিয়ে উদ্বেগ

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক পতনের পরও ভারতীয় বাজার এখনও তুলনামূলকভাবে উচ্চমূল্যায়িত রয়েছে। আয়ের পুনরুদ্ধারের আশার অভাবও বিনিয়োগকারীদের মনোভাব দুর্বল করছে।

৫. বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা করেছেন। যা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। সোমবার তিনি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর প্রভাব ফেলবে। এই অনিশ্চয়তার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে সরে আসছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে স্বস্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version