Home শিল্প-বাণিজ্য শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চান? তা হলে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায়...

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চান? তা হলে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখুন

0

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে হয়তো অর্থ উপার্জন করা সম্ভব, তবে বিনিয়োগের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। ওয়ারেন বাফেট একবার বলেছিলেন, “Price is what you pay. Value is what you get.” তাই কঠোর পরিশ্রমে উপার্জিত অর্থ বিনিয়োগের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করা প্রয়োজন।

আর্থিক লক্ষ্য, ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা ও সহনশীলতা বোঝা

প্রথমেই আপনার আর্থিক লক্ষ্য ও ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এটি স্বল্পমেয়াদি (যেমন গাড়ি কেনা) বা দীর্ঘমেয়াদি (যেমন অবসরকালীন সঞ্চয়) হতে পারে। ঝুঁকি গ্রহণের মাত্রা অনুযায়ী বিনিয়োগ পরিকল্পনা করতে হবে। যেমন….

১. ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা কম হলে ডিভিডেন্ড দেয়, এমন স্টকে বিনিয়োগ করা ভালো ফল দিতে পারে।

২. উচ্চ ঝুঁকির বিনিয়োগকারীরা প্রযুক্তি খাতের দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার কিনতে পারেন।

৩. এই ধরনের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বাড়ানো এবং পেশাদারদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচক ও বিবেচনাযোগ্য বিষয়

বিনিয়োগের আগে কোনো কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচক দেখা দরকার:

১. ডেবট টু ইক্যুইটি রেশিও: কোম্পানির ঋণের পরিমাণ বোঝায়। এই অনুপাত কম থাকলে, কোম্পানির আর্থিক অবস্থান শক্তিশালী বলে ধরা হয়।

২. নিট প্রফিট মার্জিন: মোট রাজস্বের তুলনায় নিট লাভের হার। এটি যত বেশি হয়, তত ভালো।

৩. রিটার্ন অন ইক্যুইটি: শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগ থেকে কোম্পানি কত লাভ করছে তা নির্ধারণ করে। এটি উচ্চ হলে কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত দেয়।

৪. লিকুইডিটি: বাজারে শেয়ারের ক্রয়-বিক্রয়ের সক্ষমতা বোঝায়। স্বল্প লিকুইডিটি সম্পন্ন পেনি স্টকগুলোতে বিনিয়োগ এড়িয়ে চলা ভালো, কারণ সেগুলো সাধারণত “পাম্প অ্যান্ড ডাম্প” কৌশলের শিকার হতে পারে।

৫. প্রাইস টু বুক ভ্যালু রেশিও: বিশেষ করে ব্যাংকের মতো সম্পদ-নির্ভর সংস্থার বাজার মূল্য ও হিসাব মূল্য তুলনা করা হয়। যদি এটি ১-এর কম হয়, তাহলে স্টকটির অবমূল্যায়ন হতে পারে।

বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগ

বিনিয়োগ বৈচিত্র্যকরণ (Diversification) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একক খাতে বিনিয়োগের পরিবর্তে বিভিন্ন শিল্প ও সম্পদ শ্রেণিতে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কমানো যায়।

সেবি-র নিয়মনীতি সম্পর্কে ধারণা রাখা আবশ্যক, কারণ এটি বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও বাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।

জরুরি তহবিলের গুরুত্ব

বাজার পতনের সময় জরুরি তহবিল (Emergency Fund) বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে পারে। এটি থাকলে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করার প্রয়োজন হয় না, ফলে বিনিয়োগ পরিকল্পনাকে বিশৃঙ্খল করা থেকে বিরত থাকা যায়।

মনে রাখবেন

ভারতীয় শেয়ার বাজারে সফল বিনিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট আর্থিক লক্ষ্য, ঝুঁকি বিশ্লেষণ, বৈচিত্র্যময় পোর্টফোলিও, বাজার পর্যবেক্ষণ এবং গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচকের বিশ্লেষণ অপরিহার্য।

সঠিক জ্ঞান ও নিয়মিত আপডেট থাকার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সচেতন ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version