প্রতি বছর অভিনব থিমে দর্শনার্থীদের চমকে দেয় বেহালা নূতন দল পুজো কমিটি। এবছর হীরক জয়ন্তী বর্ষে তারা দর্শনার্থীদের সামনে একখণ্ড ইতিহাস তুলে ধরে চমকে দিতে চলেছে। বেহালা নূতন দলের পুজো মণ্ডপে হাজির হয়ে দর্শনার্থীরা ফিরে যাবেন রাজা বীর সিংহ ও রাই কুমারীর দেশে।
বেহালা নূতন দলের এবারের থিম ‘শিবাণী ধাম’। সামগ্রিক ভাবে সৃজনের দায়িত্বে রয়েছেন একসঙ্গে ৩ স্বনামধন্য শিল্পী রণো বন্দ্যোপাধ্যায়, অমর সরকার ও সঞ্জয় ভট্টাচার্য। প্রতিমা শিল্পী অরিঘ্ন সাহা। আলোর দায়িত্বে রয়েছেন শান্তনু দাস ও মণ্ডপসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন স্বপন পাল।
পুজো কমিটির কর্তা সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একসময় প্রায় ৫০০ বছর আগে বাংলা, বিহার ও ওড়িশা মিলিয়ে গড়ে ওঠা সুবে বাংলায় সংগ্রামপুর নামে এক রাজ্য ছিল। কিররানি রাজত্বর রাজা দাউদ খানকে যুদ্ধে হারিয়ে রাজা রাজকিশোর সিংহ বাংলার উত্তরাঞ্চলে এই স্বাধীন রাজ্য গড়ে তোলেন। তিনি বুন্দেলখণ্ড থেকে এসেছিলেন। মুঘল সম্রাটদের সঙ্গে ছিল সখ্য। গড়ে তোলেন বিশাল এক সাম্রাজ্য। রাজপ্রাসাদ তৈরি করা শুরু হয় রাজা রাজকিশোর সিংহর আমলে। সেই নির্মাণ কাজ শেষ হয় যখন তাঁর ছেলে বীর সিংহ রাজা হন। বুন্দেলখণ্ড ও মুঘল আমলের স্থাপত্যর আদলে রাজপ্রাসাদ গড়ে ওঠে। বংশপরম্পরায় শিবের উপাসক ছিল রাজ পরিবার।

রানি চন্দ্রাবতীর আগ্রহে শিবের মূর্তি স্থাপন করেন রাজা বীর সিংহ। তাঁর রাজসভায় ছিলেন কবি ও গীতিকার রাই কুমারী। তাঁর শিল্পগুণের কথা পৌঁছে যায় মুঘল সম্রাটদের দরবারেও। রাই কুমারী ইষ্ট দেবী শিবাণীর স্বপ্নাদেশ পান। তিনি রাজা বীর সিংহকে মন্দির গড়ে তোলার অনুরোধ করেন। রাজা বীর সিংহ শিবমূর্তির সামনে শিবাণীর সুন্দর মন্দির গড়ে দেন। সে কাহিনি এখানে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।’
নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: বিষহরা গানকে ফিরিয়ে আনতে শিবমন্দির পুজোর থিম ‘বিষহরি’, মণ্ডপে ১০০ ফুট লম্বা সাপ