২০২১ সালের ২ অক্টোবরে মুম্বাইয়ের উপকূলে প্রমোদতরী কর্ডেলিয়ায় এনসিবির অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সমীর।
সেখান থেকেই মাদক সেবনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল আরিয়ান ও তার সঙ্গীদের। প্রায় এক মাস জেলে কাটিয়ে জামিনে ছাড়া পান আরিয়ান। তারপরও নিয়মিত এনসিবি দফতরের জিজ্ঞাসাবাদে হাজিরা দিতে হতো তাকে। পেশ করা চার্জশিটে এনসিবি জানিয়েছে, আরিয়ান নির্দোষ।
প্রাথমিকভাবে এই মাদককাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদসহ তদন্তের ভার ছিল এনসিবি মুম্বাই শাখার ওপর। তার নেতৃত্বে ছিলেন সমীর ওয়াংখেড়ে। পরে ওই তদন্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকায় তদন্তভার চলে যায় কেন্দ্র নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে।
ভুয়ো তদন্ত, তদন্তে প্রভাব খাটানোসহ একাধিক অভিযোগে পদ থেকে সরতে হয়েছিল সমীরকে। পরবর্তী সময়ে এই অফিসারেরই বিপুল সম্পত্তির বহর দেখে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন। বারবার বিদেশ সফর, বহুমূল্য সম্পত্তি এমনকি, শাহরুখ খানের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে।
কিন্তু এইবার আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল আরিয়ান মাদক কান্ড নিয়ে।
শাহরুখ খান ছেলেকে মাদক কান্ড থেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আই পি এস অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে গভীর রাতে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করেন। আর সেই গোপনীয় ম্যাসেজ ফাঁস করলেন এই আইপিএস অফিসার।
আদালতের কাছে দাখিল করা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটগুলিতে দেখা যাচ্ছে, শাহরুখ খান লিখেছেন, ‘সমীর সাহেব, আমি কি আপনার সঙ্গে ১ মিনিটের জন্য কথা বলতে পারি? প্লিজ। শাহরুখ খানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। আমি জানি নিয়ম অনুযায়ী এটা অনুচিত কাজ, হয়তো পুরোপুরিভাবেই নিয়মবিরুদ্ধ, কিন্তু, বাবা হিসেবে যদি আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম। দয়া করে… লাভ, শাহরুখ।’ এই মেসেজটিতে সমীর ওয়াংখেড়ে শাহরুখ খানকে কোনও রিপ্লাই দেননি। এরপর ৩ অক্টোবর তারিখে তিনি শাহরুখ খানকে ফোন করতে বলেন।
দীর্ঘ ওই কথোপকথন জুড়ে মোটামুটি ওই সুরই বজায় থেকেছে। সমীরকেও জানাতে দেখা গিয়েছে, ‘প্রিয় শাহরুখ, একজন বাবা হিসেবে আপনার প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবেই জানি। আশা করি যা হবে ভালই হবে। নিজের খেয়াল রাখবেন।’
প্রায় ১০ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে দেশে ফিরছিলেন শাহরুখ। কিন্তু বিমানবন্দরে পা রাখতেই ঘটে বিপত্তি। বলিউডের ‘কিং’-কে আটকে দিয়েছিলেন শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তারা। সমীর তখন এনসিবি-র কর্মকর্তা নন। শুল্ক বিভাগের ডেপুটি কালেক্টর। বিমানবন্দরে শাহরুখকে আটকে রেখে দীর্ঘ সময় ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জানা যায়, হল্যান্ড এবং লন্ডন থেকে অতিরিক্ত কেনাকাটা করে ফেলেছিলেন শাহরুখ এবং তার পরিবার। ২০টি ব্যাগ বোঝাই করে জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিলেন তারা। নিয়ম ভেঙে পার পাননি স্বয়ং শাহরুখ। দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হয়েছিল তাঁকে।
ছবি- ইন্সটাগ্রাম
বিনোদনের খবরের সব আপডেট পেতে পড়ুন খবর অনলাইন