মডেলিং দুনিয়া ও সমাজ সচেতন মহলে শোকের ছায়া। মাত্র ২৬ বছর বয়সে প্রাক্তন মিস পুদুচেরি সান রেচাল-এর মর্মান্তিক মৃত্যুতে হতবাক পুদুচেরি। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে।
রেচাল, যার আরেক নাম ছিল শঙ্করপ্রিয়া, করমানিকুপ্পমের নিজের বাড়িতে অতিরিক্ত মাত্রায় রক্তচাপের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন, এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে তিনি নিজের বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
প্রথমে তাঁকে পুদুচেরির একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একাধিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে শেষমেশ জওহরলাল ইনস্টিটিউট অফ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (JIPMER)-এ ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই চিঠিতে রেচাল স্পষ্টভাবে লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা যাবে না।
তবে, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে—বিশেষ করে, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, বিয়ের পরবর্তী টানাপোড়েন, এবং আর্থিক সংকট এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো ভূমিকা রেখেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি বিয়ে করেছিলেন রেচাল। কিন্তু আর্থিক ও মানসিক চাপ ক্রমেই বাড়ছিল তাঁর জীবনে। নিজের ক্যারিয়ারের জন্য গয়না বিক্রি করে অর্থ জোগাড় করছিলেন তিনি। বাবার কাছে সাহায্য চেয়েও পাননি, কারণ তাঁর বাবা তখন ভাইয়ের দায়িত্বে ব্যস্ত ছিলেন।
আলাদা কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন রেচাল
২০২২ সালে মিস পুদুচেরি খেতাব জেতার পর থেকেই জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে রেচালের। এরপর তিনি Miss Dark Queen Tamil Nadu ও Miss World – Black Beauty ক্যাটেগরিতে খেতাব জেতেন।
ভারতে গায়ের রং নিয়ে বিদ্যমান বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিভিন্ন পোস্টে সেই সাহসী কণ্ঠস্বর উঠে এসেছিল। তিনি ছিলেন গ্ল্যামার আবৃত র্যাম্পের বাইরে, সমাজ পরিবর্তনের কণ্ঠস্বর।
শোক ও প্রশ্ন
এই মর্মান্তিক ঘটনায় মডেলিং ইন্ডাস্ট্রি ও সাধারণ মানুষ শোকস্তব্ধ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড করছে #JusticeForRechal এবং #StopColorBias।
একই সঙ্গে আবারও সামনে উঠে আসছে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, পেশাগত চাপ, এবং একজন পাবলিক ফিগারের নীরব লড়াই নিয়ে প্রশ্ন।