বিরল স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত গায়িকা অলকা ইয়াগনিক। সামজমাধ্যমে নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। ধীরে ধীরে তাঁর শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে। কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ভাইরাল অ্যাটাকের কারণে তাঁর এই সমস্যা হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, ‘এতকাল কেন চুপ আছি, অনেকেই জানতে চাইছেন আমার কাছে। এখন মনে হচ্ছে, নিস্তব্ধতা ভাঙার সময় এসে গিয়েছে। আমার অনুরাগী, বন্ধু, অনুগামী এবং শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে জানাচ্ছি, কয়েক সপ্তাহ আগে বিমানযাত্রা করেছিলাম। হঠাৎই আমার মনে হয়, আর কানে শুনতে পারছি না। প্রথমে ঘটনায় ধাতস্থ হতে কষ্ট হচ্ছিল। নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। এখন কিছুটা হলেও সামলে নিয়েছি’।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী আমি এক বিরল রোগের শিকার। এটিকে তাঁরা ভাইরাল অ্যাটাক আখ্যা দিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে আমি একেবারেই অবগত ছিলাম না আগে। আপনারা দয়া করে আমার জন্য প্রার্থনা করুন।’
চিকিৎসকদের মতে এই ধরনের রোগের নাম সেনসরিনিউরাল হেয়ারিং লস। Sensorineural hearing loss (SNHL) বা সেনসরিনিউরাল শ্রবণশক্তি হ্রাস হল একটি শ্রবণ সমস্যার ধরন যেখানে কানের অভ্যন্তরীণ অংশ বা শ্রবণ-স্নায়ুর ক্ষতি হয়। এটি সাধারণত কানের কোচলিয়া বা শ্রবণ-স্নায়ুর অস্বাভাবিকতার কারণে ঘটে।
SNHL-এর কারণ:
জন্মগত সমস্যা: জেনেটিক ত্রুটি বা গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ।
বয়সজনিত শ্রবণশক্তি হ্রাস: প্রেসবাইকিউসিস নামে পরিচিত।
জোরালো শব্দের সংস্পর্শ: দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ শব্দের মধ্যে থাকা।
সংক্রমণ: মেনিনজাইটিস, মাম্পস, রুবেলা ইত্যাদি।
মাথায় আঘাত: গুরুতর আঘাতের কারণে কানের অভ্যন্তরীণ অংশের ক্ষতি।
ঔষধ: কিছু ওষুধ কানের স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে।
মেনিয়ার’স ডিজিজ: অভ্যন্তরীণ কানের একটি অবস্থা।
SNHL-এর লক্ষণ:
শ্রবণশক্তি হ্রাস: বিশেষ করে উচ্চ স্বরের ক্ষেত্রে।
শব্দের বিকৃতি: শব্দগুলি অস্পষ্ট বা বিকৃত শোনায়।
টিনিটাস: কানে বাজা বা শোঁ শোঁ শব্দ।
ব্যালান্সের সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বেশি শব্দ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সেনসরিনিউরাল শ্রবণশক্তি হ্রাস একটি সাধারণ সমস্যা এবং এটি সঠিকভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করার মাধ্যমে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।