নিজস্ব প্রতিনিধি: টিআরপি-তে দীর্ঘ সময় ধরে প্রায় শীর্ষে থাকা দুই মেগা সিরিয়াল ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ এবং ‘জগদ্ধাত্রী’ পেল সেরার সম্মান। স্টার জলসা ও জি বাংলার এই দুই সিরিয়াল হল এসভিএফ এবং ব্লুজ প্রোডাকশনের মেগা। সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি সিরিয়ালের পুরস্কার পেল এই দুই মেগা।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হল ‘টেলি অ্যাকাডেমি পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠান। ছোটো পর্দার তারকা ও কলাকুশলীদের হাতে এদিন পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং টেলি অ্যাকাডেমি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই অনুষ্ঠানের পথচলা। এবার মোট ৪১টি শাখায় ৬৬ জনকে সম্মানিত করা হল টেলি অ্যাকাডেমির তরফে। সেরা জুটির পুরস্কার পেল দুটি জুটি – ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র সূর্য-দীপা এবং ‘বাংলা মিডিয়াম’-এর বিক্রম-ইন্দিরা। ‘জগদ্ধাত্রী’ সিরিয়ালের অঙ্কিতা মল্লিক পেলেন সেরা অভিনেত্রী এবং ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র সূর্য তথা দিব্যজ্যোতি দত্ত সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেলেন। ‘গোধূলি আলাপ’ সিরিয়ালে ‘সেরা অভিনয়’-এর জন্য কৌশিক সেনকে বিশেষ সম্মান প্রদান করা হয়।
এ দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল ‘জগদ্ধাত্রী’, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, ‘বাংলা মিডিয়াম’, ‘গুড্ডি’, ‘রামপ্রসাদ’, ‘গাঁটছড়া’, ‘নিমফুলের মধু’, ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর মতো ধারাবাহিকের নাম। বিশেষ ভাবে প্রশংসা করলেন পর্দার ‘রামপ্রসাদ’ তথা সব্যসাচী চৌধুরীর অভিনয়ের। তিনি যে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ, তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন।
মমতা তাঁর পছন্দের সব সিরিয়ালের নাম বলেন। তাঁর কথায়, “জীবনযুদ্ধে কী ভাবে লড়াই করতে হয়, তা সিরিয়াল থেকে শেখা যায়। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ তো খুব ভালো। ছোট্ট দুটো ফুল, বাপ রে কী ভালো কথা বলে! আমাদের লাড্ডুও ভালো অভিনয় করে।” ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এ একটা পরিবার যে ভাবে একটা ব্যাবসা গড়ে তুলেছে, তা মমতার ভালো লেগেছে।
এক নজরে সেরার তালিকা-
সবচেয়ে জনপ্রিয় সিরিয়াল– ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ও ‘জগদ্ধাত্রী’
সেরা অভিনেতা– দিব্যজ্যোতি দত্ত (সূর্য, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’)
সেরা অভিনেত্রী– অঙ্কিতা মল্লিক (‘জগদ্ধাত্রী’)
সেরা পরিবার– ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, ‘নিমফুলের মধু’ এবং ‘গাঁটছড়া’
সেরা জুটি– সূর্য-দীপা (‘অনুরাগের ছোঁয়া’) এবং বিক্রম-ইন্দিরা (‘বাংলা মিডিয়াম’)
সেরা বয়স্ক জুটি– মিঠু চক্রবর্তী ও অনিন্দ্য সরকার (‘হরগৌরী পাইস হোটেল’)
সেরা প্রযোজক– ম্যাজিক মোমেন্টস (লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়) এবং টেন্ট (সুশান্ত দাস)
সেরা বউমা– স্বস্তিকা ঘোষ (দীপা, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’)
প্রিয় ছেলে– গৌরব চট্টোপাধ্যায় (ঋদ্ধি, ‘গাঁটছড়া’), রাহুল মজুমদার (শঙ্কর, ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’)
সেরা শাশুড়ি – রূপাঞ্জনা মিত্র (লাবণ্য সেন, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’)
সেরা মা– জুন মালিয়া (মঞ্জিরা, ‘গাঁটছড়া’)
সেরা বোন ও ভাই– অনুষ্কা (বনি, ‘গাঁটছড়া’), প্রারব্ধি (জয়, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’)
বিশেষ পুরষ্কার– তৃণা সাহা (ঝোরা, ‘বালিঝড়’)
সেরা খলনায়ক– অনিন্দ্য চক্রবর্তী (পলাশ, ‘খেলনা বাড়ি’) ও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় (রাহুল, ‘গাঁটছড়া’)
সেরা খলনায়িকা– চান্দ্রেয়ী ঘোষ (শৈলজা, ‘গৌরী এলো’), রশ্মি ভট্টাচার্য (রোহিনী, ‘গোধূলি আলাপ’), প্রিয়া পাল (দিব্যা, ‘জগদ্ধাত্রী’), অহনা দত্ত (মিশকা, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’)
আজীবন অবদানের স্বীকৃতি– সুমন্ত মুখোপাধ্যায়
‘সেরা অভিনয়’ (বিশেষ সম্মান)– কৌশিক সেন (‘গোধূলি আলাপ’)
মরোণোত্তর বিশেষ কৃতীসম্মান– ঐন্দ্রিলা শর্মা
অনুপ্রেরণামূলক চরিত্র– সব্যসাচী চৌধুরী (‘রামপ্রসাদ’), তিয়াসা লেপচা (‘বাংলা মিডিয়াম’)
পাদপ্রদীপের তলায় (বিশেষ সম্মান)– নিমাই ঘোষ
ছবি: রাজীব বসু